নওগাঁর পত্নীতলায় র্যাফেল ড্র নিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা কর্ত্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। আকর্ষনীয় পুরষ্কারের মুলা ঝুলিয়ে মেলা কর্ত্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকার টিকিট বিক্রয় করলেও র্যালের ড্র না করেই মেলা গুটিয়ে চলে যায়। এ নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই মেলা কর্ত্তৃপক্ষের উপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন বিসিক, নওগাঁর আয়োজনে এবং নজিপুর বাসষ্ট্যান্ড বণিক কমিটির সার্বিক সহযোগিতায় পত্নীতলা শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়ামে (পাবলিক মাঠ) মাসব্যাপি শিল্প ও বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়। ৯ জানুয়ারী স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শহীদুজ্জামান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন। শিশু কিশোরদের খেলার মাঠ দখল, মাঠের অবকাঠামো পরিবর্তন করে এবং এসএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে মেলা আয়োজন করায় শুরুতেই এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন মেলা কর্ত্তৃপক্ষ। মেলায় দর্শক বাড়ানোর কৌশল হিসাবে মেলা কর্ত্তৃপক্ষ শুরুতে ১০টাকার প্রবেশ মুল্যের সাথে আকর্ষনীয় পুরষ্কারের প্রলোভন দিয়ে র্যাফেল ড্র জুড়ে দেন। কয়েক দিনের মাথায় প্রবেশ ফি ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০টাকা করা হয়। মাঠ দখল করে মেলা আয়োজন ও এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে মেলা চলায় বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী সোচ্চার হন। সর্বমহলের দাবীর প্রেক্ষিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় প্রশাসন শিল্প ও বাণিজ্য মেলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। মেলা কর্ত্তৃপক্ষ মেলা শেষে মাঠ পূর্বের অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দেওয়ার কথা থাকলেও অদ্যাবধি তা করা হয়নি। এ কারণে স্থানীয় শিশু কিশোররা খেলাধুলার জন্য মাঠে নামতে পারছে না।
কর্ত্তৃপক্ষ মেলা বন্ধ করে চলে গেলেও র্যাফেলের কোন ড্র অনুষ্ঠিত হয়নি। র্যাফেল ড্রর নামে টিকিট বিক্রয় করে ড্র না করা প্রতারণার শামিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে রেজাউল, হাবিবা, মিন্টু, সোহেলসহ আরো কয়েক জনের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, আমরা এখনও প্রবেশ টিকিট সযতেœ রেখেছি এই ভেবে যে, র্যাফেল ড্র তো অবশ্যই হবে। র্যাফেল ড্র যে হবে না এটা আমাদের ভাবনা তেই নেই।
এ বিষয়ে নজিপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর গৌতম চন্দ্র দে বলেন, শিল্প ও বাণিজ্য মেলা কর্ত্তৃপক্ষ র্যাফেল ড্রর নামে প্রবেশ মুল্য হিসাবে জনগণের প্রায় ৯লাখ টাকা পকেট কেটেছে। র্যাফেল ড্র না করেই চলে যাওয়াটা শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে মনে করি। এর মাধ্যমে স্থানীয় জনতার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। নজিপুর বাসষ্ট্যান্ড বণিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ,জেড মিজান বলেন, মেলায় আমরা ছিলাম তাল পাতার সেপাই, নজিপুর বাসষ্ট্যান্ড বণিক কমিটির নাম দিয়ে আমাদের ব্যবহার করা হয়েছে। সভাপতি মো. শহিদুল আলম বেন্টু বলেন এ বিষয়ে বিসিক কর্ত্তৃপক্ষ বলতে পারবে। আমার কিছু জানা নেই।
এবিষয়ে নওগাঁ বিসিকের সহকারী কর্মকর্তা শামীম আহমেদের সাঙ্গে কথা বলতে তিনি বলেন, মেলাতে আমরা র্যাফেল ড্রর নামে টিকিট বিক্রয় করিনি। নজিপুর বাস্ট্যান্ড বনিক কমিটি র্যাফেল ড্রর নামে প্রবেশ মূল্য দশ টাকা থেকে বাড়িয়ে বিশ টাকায় বিক্রয় করেছে। ওই টাকা বনিক কমিটির কাছে রয়েছে। তারা র্যাফেল ড্রর দিবে কিনা তারাই ভাল জানে। তবে মাঠ সংস্কার আমরা করে দিবো।
পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন সরকার জানান, এ বিষয়ে বিসিক ও নজিপুর বাস্ট্যান্ড বনিক কমিটি উভয়ের সঙ্গে কথা বলে দেখব।