লালমনিরহাট জেলা শহরের পৌরসভার উত্তর সাপটানা সখের বাজার সংলগ্ন কুমেরপাড়া নাওডারা খালে নির্মিত বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে দির্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ১১টি গ্রামের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ। এসব গ্রামের ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন মোটরসাইকেল আরোহী এই সাকো হতে পড়ে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তাই এলাকাবাসী দাবী এখানে দ্রুত একটি সেতু নির্মান করা হোক।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় সখের বাজার সংলগ্ন জহুরল মিস্ত্রির বাড়ির পাশে কুমারপাড়া নাওডারা খালের উপর ৩টি রিং স্লাপের উপর নির্মিত কালভার্টটি ধরলা নদীর পানির তোড়ে ভেঙ্গে যায়। ফলে বন্যার পানি পানি প্রবেম করে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার পানি নেমে গেলে গ্রামবাসিরা বাড়িবাড়ি অর্থ ও বাঁশ সংগ্রহ করে সেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে সেখানে একটি বাঁশের সাকোটি নির্মান করে। এই সাকো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ, শিশু শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে।
সেতুটি না থাকায় এখানকার ১১টি গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক পরিবার তাদের উৎপাদিত কৃষি পন্য পাশ্ববর্তী কুলাঘাট, ভাটিবাড়ি, মোগলহাট, মেগারাম ও বড়বাড়ি বাজারের নিয়ে বিক্রি করতে পারছেনা। তাদের কে অনেক দূর রাস্তা ঘুরে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে কৃষি পন্য পরিবহন করে বাজারে নিতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে কৃষি পন্যের সঠিক মুল্য পেলেও লাভের মুখ দেখছেন না। এদিকে পাঁকা রাস্তার বাঁকে এই বাঁশের সাকোটি হওয়ায় অনেকে দেখতে না পেয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখিন হচ্ছেন। সেতুটি ভাঙ্গার পর যারা দুরদুরান্ত হতে কোন দিন এপথে আসেনি তারা পূর্বের ন্যায় মোটরসাইকেল চালিয়ে আসতে গিয়ে বাঁশের সাকোর ওপর উঠায় নড়বরে বাঁশের সাকোটিতে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে নিচে পড়ে যায়।
এক মাসে এভাবে প্রায় নারী শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জন মোটরসাইকেল আরোহীরা এই বাঁশের সাকো হতে পড়ে গুরত্বর আহত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন পাড়ার শিশু শিক্ষার্থী সাকোটি পাড় হতে নিচে পড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ওই এলাকায় এই বাঁশের সাঁকোটি মরণ ফাঁদে পরিনিত হয়েছে।
গ্রামবাসি আশরাফুল ইসলাম(৪৫) জানান, সাকোটির পাশে পৌরসভাকর্তৃপক্ষ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পরিবেশবান্ধব ময়লার ডাম্পিং তৈরী করছে। অথচ পৌরসভা ১১টি গ্রামের কয়েক হাজার গ্রামবাসির যাতাযাতের একমাত্র রাস্তার এই ছোট একটি সেতু নির্মান করছেন না।
গ্রামবাসিরা এখানে একটি সেতু নির্মানের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা, পৌরসভার মেয়র, স্থানীয় এমপিসহ নানা জায়গায় আবেদন করেও ৩ বছরেও এই সেতুটি নির্মান হয়নি।
লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র মোঃ রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু এ সেতুর ব্যাপাওে জানান, সেতুটি পৌরসভার ভিতরে পড়েছে ঠিকই কিন্তু রাস্তাটি পৌরসভার নয়। এটা এলজিইডির রাস্তা, তাই এখানে সেতু নির্মানের দায়িত্ব এলজিইডি কর্তৃপক্ষের। পৌরসভার পক্ষ থেকে এলজিইডিকে পত্র দিয়ে জানানো হয়েছে।
লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফ আলী খাঁন জানান, বরাদ্দের অভাবে এখানে নতুন করে সেতু নির্মান করা যাচ্ছে না। তবে প্রজেক্ট তৈরি করে উর্দ্ধতনকর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে খুব তারাতারি সেখানে একটি নতুন সেতু নির্মান করা হবে বলে জানান তিনি।