গাজীপুরের টঙ্গী তিস্তারগেট এলাকায় এক যুব মহিলালীগ নেত্রীকে (২৬) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সহযোগিতার দায়ে হোসেন সর্দার (৩২) ও মিঠু তালুকদার (৩০) নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রধান অভিযুক্ত স্থানীয় ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী আলী আসগরসহ তিনজন পলাতক রয়েছেন। ওই নেত্রী টঙ্গী থানা য্বু মহিলালীগের সম্পাদিকা এবং ৪৬নং ওয়ার্ড যুব মহিলালীগের সভাপতি পদপ্রার্থী বলে জানা গেছে। তবে দলে তার সাংগঠনিক কোন পদ নেই বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র দাবি করেছে। এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে পাঁচজনকে এজাহার নামীয় আসামি করে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
আলোচিত ওই নেত্রী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনি স্থানীয় হকের মোড়ে একটি ব্যবসা পরিচালনা করেন এবং স্বামীর সংসারে তার একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। বিয়ের আশ্বাসে প্রধান আসামি আলী আসগরের সাথে প্রায় ১০ বছর যাবত তার প্রেমের সম্পর্ক বিদ্যমান। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি আসগর বন্ধুদের সহযোগিতায় তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর রাত ৮টায় আসগরের ভগ্নিপতি সামরুলের ভাড়া বাসায় নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় বিয়ের বিষয়ে কথা বলার জন্য স্থানীয় তিস্তারগেট এলাকায় তাকে ডেকে নিয়ে মামলার আসামিরা মারধর করে এবং ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়।
এদিকে সরকারি দলের নেত্রীর ধর্ষণ মামলায় টঙ্গীতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে সর্বত্রই ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ঝড় বইছে। বিষয়টিকে রহস্যজনক মনে করছেন অনেকে। এদিকে বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত হয়েও সরকারি দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও স্থানীয় প্রশাসনে ওই নেত্রীর ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে। একজন টোকাই হত্যার ঘটনায় আলোচিত ওই নেত্রী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও রয়েছে। এ ছাড়া টঙ্গীতে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে উচ্চশব্দে গান বাজিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় এক যুবককে নির্যাতনের নেতৃত্ব দেওয়া, মাদক ব্যবসাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই আলামিন বলেন, বিষয়টিকে আমরা এখনো ধর্ষণ বলতে পারছি না। কোনো নারী থানায় ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে এলে আমরা মামলা নিতে বাধ্য। এরপর তদন্তেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। মামলার বাদী বা ভিকটিমকে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্টসহ আণুসাঙ্গিক অন্যান্য তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পরই প্রকৃত ঘটনা বলা যাবে।
এব্যাপারে টঙ্গী পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিমকে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।