বগুড়া শহরে আবারো ভয়ংকর কিশোর গ্যাং তৎপর হয়ে উঠেছে। ইত্ব পর্বে পুলিশের জোরালো তৎপরতায় বেশ কিছু দিন নিরব থাকার পর শহরে আবারো একাধিক ভয়ংকর ছিনতাইকারী কিশোর গ্যাং তাদের তৎপরতা শুরু করেছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
এমন ঘটনায় মফস্বল থেকে আসা ৩ স্কুল ছাত্রকে ছিনতাইয়ের লক্ষে অপহরণ করে তাদের সর্বস্ব ছিনতাই করার ঘটনায় রাশেল ও রাফি নামের ২কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছে কুখ্যাত গ্যাং এর লিডার সিজু ওরফে মিজু।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মালগ্রাম উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মুন্নার ছেলে রাসেল(১৯)এবং একই এলাকার রায়হানের ছেলে রাফি(১৮)। পলাতক তাদের সঙ্গীর নাম সিজু (২০)।
পুলিশের একটি দায়িত্বশীল বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ সংস্থা এফএনএস’কে জানিয়েছে, গত বুধবার সকালে জেলার ধুনট থেকে নাঈম,আঃ রকি এবং রেজওয়ান নামের ৩ স্কুল ছাত্র বগুড়া শহরে কেনাকাটা করতে ও বেড়াতে আসে। তারা এ সময় শহরের রানার প্লাজা থেকে একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন কেনে এবং কেনাকাটার একপর্যায়ে হোটেলে খাওয়া দাওয়া সেরে স্থানীয় পৌর পার্কে ঘুড়তে যায়।
এসময় আগে থেকে তাদের পিছু নেয়া কিশোর গ্যাং এর ৩ সদস্য রাসেল, রাফি ও সিজু তৎপর হয়। একপর্যায়ে ওই ছাত্ররা পার্ক থেকে বেড়িয়ে এলে তাদের গা ঘেশে কথা আছে বলে ছোঁরা দেখিয়ে ২টি রিক্সায় উঠিয়ে নেয় আটককৃতরা। এর একপর্যায়ে তাদের বহনকারী রিক্সা শহরের খান্দার এলাকায় পৌছলে ৩ছাত্রের মধ্য ২জন সুযোগ পেয়ে রিক্সা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে আসে। পরে তারা তাদের আত্বিয়র মাধ্যমে বিষয়টি কেন্দ্রীয় পুলিশের ৯৯৯ নং এ ঘটনা জানিয়ে সাহার্য্য প্রার্থনা করে। ৯৯৯ এর নির্দেশনায় বিষয়টি জানতে পেয়ে তৎপর হয় সদর থানা পুলিশ।
এদিকে আঃ রকি নামের ওই ছাত্রকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় অপহরনকারীরা।এসময় তারা মোবাইল ফোনে পালিয়ে আসা ২ছাত্রকে নূতন ক্রয়করা স্মার্ট ফোনটি নিয়ে সরকারী আজিজুল হক কলেজ শাখা (নতুন ভবন) এলাকায় এসে তাদের সঙ্গী আঃ রকিয়ে নিয়ে যেতে বলে তারা। বিষয়টি জানতে পেরে এলাকায় ফাঁদ পাতে সদর থানার একটি দল।
বগুড়া সদর থানার এসআই সোহের রানা ,এসআই মোন্নাফ, এএসআই আশরাফ সহ পুলিশের একটি দল বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজ শাখা (নতুন ভবন) এলাকায় অপহরনকারীদের জন্য ফাঁদ পেতে আত্বগোপন করে থাকে। এ সময় পুলিশের কথা মত রেজওয়ান ও নাঈম মোবাইল নিয়ে সেখানে গেলে তাদের নিকট থেকে মোবাইল নেবার চেষ্টা করে আটককৃতরা। পরে পুলিশের পাতা ফাঁদে হাতে নাতে আটক হয় কিশোর অপরাধী চক্রের ২জন।এসময় পুলিমের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায় সিজু নামের অপর এক কিশোর অপরাধী।
উল্লেখ্য, শহরের বিভিন্ন স্থানে পরিবারের এক শ্রেণীর বখে যাওয়া কিশোর অপরাধী যাদের অধিকাংশই স্কুল ছাত্র তারা বিভিন্ন সময়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে ওঁৎ পেতে অপেক্ষা করে থাকে। বিভিন্ন কৌশলে সুযোগ বুঝে কোন অল্প বয়সী নিরীহ গোবেচারা টাইপের শিক্ষার্থীদের ’কথা আছে’ কিংবা ’ওই মেয়ে তোমার সাথে কথা বলতে চায়’ কিংবা ’তাকে তুমি ঈভ টিজিং করেছে’ বড় ভাই ডাকছে এমন কৌশলে ডেকে নেয়। এবং এর একপর্যায়ে ছোরার ভয় দেখিয়ে রিক্সা কিংবা অটোরিক্সায় তুলে নিয়ে নির্জন কোন স্থানে নিয়ে গিয়ে কিংবা আটকে রেখে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় তারা। এছাড়াও সুযোগ বুঝে তাকে আটক রাখা হয়েছে নিদিষ্ট অংকের মুক্তিপন দিলে তাকে ছাড়া হবে এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয় তারা।