কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে দিনমজুর ঘরের গৃহবধু এক রোগীর ওপর যৌন নির্যাতন চেষ্টার ঘটনা ঘটিয়েছে আলমগীর হোসেন নামের এক পল্লী চিকিৎসক। ওই গৃহবধু মেয়েলি সমস্যা ও পেটে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসার জন্য গেলে লম্পট ওই চিকিৎসক তার চেম্বারের রোগী দেখার কক্ষে চিকিৎসার নামে জোরপূর্বক তার যৌন নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। নির্যাতিত গৃহবধুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রক্ষা পায় গৃহবধু। উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন দুর্গম সাজাই আনন্দ বাজারে ওই চিকিৎসকের নিজস্ব চেম্বারে গত বুধবার সকাল ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
যৌন নির্যাতনের ওই ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধু থানায় অভিযোগ দায়ের করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক। ওই দিনই সন্ধার দিকে নির্যাতিত গৃহবধুর স্বামী আমিনুল ইসলাম বাজারে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর হামলা করে অভিযুক্ত আলমগীর ও তার লোকজন। এ সময় আমিনুলকে বেদম মারপিট করে অভিযুক্তরা। গুরুতর জঘম নিয়ে আমিনুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। নির্যাতিত পরিবারের দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে ওইসব তথ্য।
নির্যাতিত পরিবারের অভিযোগ ও খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক আলমগীর হোসেন ও তার স্বজনরা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী। ফলে চিকিৎসার নামে যৌন নির্যাতনের মতো একটি জঘন্য ঘটনার পরও চরের মানুষ প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। অপরদিকে নির্যাতিত গৃহবধুর স্বামী একজন দিনমজুর। অর্থ ও ক্ষমতার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত গৃহবধুর স্বামী আমিনুল ইসলাম সাংবা;িকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘থানা থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাকে চাপ দেয়া হচ্ছে। মামলা তুলে না আসলে গ্রামেই থাকতে দিবে না-এমন হুমকি ধামকি দিচ্ছে তারা।’
নির্যাতিত গৃহবধুর বাড়ি উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের সাজাই নতুন গ্রাম। অপরদিকে পার্শ্ববর্তি সাজাই গ্রামে বাড়ি অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসকের। এ ব্যাপারে ওই এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দিন দুপুরে বাজারে ডাক্তার তার চেম্বারে একটা মেয়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটাল অথচ এখন পর্যন্ত থানা পুলিশও আসেনি। চরের যেই ওই ঘটনার বিচারের কথা বলছে তাকেই হুমকি দিচ্ছে অভিযুক্তরা।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজীবপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোর্শেদ তালুকদার জানান, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।