মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দায়েরকৃত মামলায় কুড়িগ্রামের উলিপুরে ১২ রাজাকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি তদন্তকারীদল বহুল আলোচিত হাতিয়া গণহত্যাসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে এ এলাকার সকল নারকীয় হত্যাকান্ডের তদন্ত শুরু করেন। তদন্তকারী দল কয়েক দফা তদন্ত শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেনে। মামলা নং-০১/২০২০ইং। মামলা দায়েরের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এসব যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন। এরই প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উলিপুর অঞ্চল আল মাহমুদ হাসান ও কর্মকর্তা ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের ৫টি টিম গত শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ১২ জন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া ভবেশ গ্রামের মৃত তাহের উদ্দিনের পূত্র মাওঃ আকবর আলী (৭৮), রামখানা গ্রামের মৃত আঃ জলিলের পূত্র শাহাজাহান আলী(৬৮), ডোবার পাড় গ্রামের মৃত নজিম উদ্দিনের পূত্র সাইদুর রহমান ওরফে সৈয়দ মাওলানা(৬২), উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই গ্রামের মৃত আঃ জব্বারের পূত্র নুর ইসলাম(৫৮), ইরফান আলীর দুই পূত্র ইছাহাক আলী(৬৩) ও ইসমাইল হোসেন (৬৬), মৃত আমান উল্লার পূত্র ওসমান আলী (৬৮), মতিউল্লার পূত্র আবদুর রহমান(৬৩), বছিয়ত উল্লার পূত্র সোলেমান আলী(৭২),আঃ জব্বারের পূত্র আবদুর রহিম (৬৩), মৃত ফজল উদ্দিনের পূত্র আঃ কাদের (৬৫) ও উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের দিগর মালতিবাড়ি গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন সরকারের পূত্র মফিজুল হক(৮০)।
এদিকে একই মামলায় শরফ উদ্দিনের পূত্র মকবুল হোসেন দেওয়ানী(৭০) কে জেলার রাজারহাট উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের নলকাটা বালাকান্দি গ্রাম থেকে গেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি, রামখানা, নীলকন্ঠসহ আশপাশ গ্রামে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী, রাজাকার-আলবদর ও স্থানীয় দালালরা মিলে প্রায় ৭ শত নিরীহ-নিরস্ত্র ঘুমন্ত মানুষকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় ওই গ্রামগুলো জ্বালিয়ে শ্বশান ভূমিতে পরিণত করে।
উলিপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।