করোনা ভাইরাস আতঙ্কে এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ইতালি ফেরত পিতা-পুত্রসহ পরিবারের ৫ সদস্য হোম নিবিড় পর্যবেক্ষনে রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।
ওই পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পিতা-পুত্র গত ৪ মার্চ ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। প্রশাসন তাদেরকে সোমবার রাত থেকে বাইরে না বেরুনোর অনুরোধ করেছেন। প্রশাসনের অনুরোধটি তারা সাদরে গ্রহন করেছেন। ইতালি ফেরত পিতা-পুত্রসহ পরিবারের ৫ সদস্য রয়েছেন। তারা এক সপ্তাহ নিবিড় পর্র্যবেক্ষনে থাকবেন। তবে তারা মঙ্গলবার বিকাল ৪ টার দিকে জানিয়েছেন পরিবারের সবাই সুস্থ্য রয়েছেন। কয়েকদিনের জন্য তাদের সাময়িক অসুবিধা হলেও দেশ ও জনগণের স্বার্থেই তারা বাড়ীতেই থাকবেন।
বিষয়টি নিয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে ইতালি ফেরত পিতা-পুত্রসহ তাদের পরিবারকে সোমবার রাত থেকে এক সপ্তাহ হোম কোয়ারেনটাইনের রাখতে তার বাড়ীতে গ্রাম পুলিশ দিয়ে সাদা পোষাকে রাখা হয়েছে। থানা পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ সব সময় খোঁজ খবর নিচ্ছেন। মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় ৭ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদেরকে নিয়ে সভা করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে কোন বিদেশ ফেরত ব্যাক্তি আসলে তাদেরকে ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টাইনে রাখা হবে। এজন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জরুরী টেলিফোন কল সেন্টার চালু করা হয়েছে। তবে কাউকে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও তিনি জানান।
এদিকে নভেল করোনা ভাইস ডিজিজ বা কভিড-১৯ এর সংক্রমন ঠেকাতে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন প্রস্তুুতি গ্রহন করেছে। এরইমধ্যে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে করা হয়েছে একটি কমিটি। মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমকে সভাপতি ও সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলামকে সদস্য সচিবসহ মোট ১১ সদস্যর কমিটি করা হয়েছে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৫ টি করে বেড আইসোলেউশন করা হয়েছে। সেই সাথে রাজবাড়ীর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্রকে কোয়ারেনটাইনের জন্য প্রস্তুুত করা হয়েছে। সবার সহযোগিতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ প্রদান করেন তিনি।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ দিপক কুমার বিশ্বাস জানান, আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। সেই সাথে সভা সমাবেশ ও বেশি লোকের আনাগোনা এমন স্থান এড়িয়ে চলতে হবে। সেই সাথে সন্দেহ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এ-সংক্রান্ত আমরা তিনটি সভা করেছি। সভাগুলোতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ ছিলো। জেলা এবং উপজেলায় আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজবাড়ীর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্রকে কোয়ারেনটাইনের জন্য প্রস্তুুত করা হয়েছে। সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়েই এই ভাইরাস মোকাবেলা করা হবে।