লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর রং মিস্ত্রীর সন্তান শরীফুল ইসলাম। পরিবারের অভাব অনটনের মাঝেও অষ্টম শ্রেণি থেকে টিউশনি করে পড়াশুনা চালিয়েছেন সে। শরীফুল টিউশনির টাকায় পড়াশুনা চালিয়ে গিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দিনমজুর বাবার পক্ষে এত টাকা দিয়ে পড়াশানা করার সমর্থ নেই। তাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শরীফুলের পড়াশুনা।
জানা গেছে, শরীফুল ইসলাম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গীমারী ইউনিয়নের উত্তর সিংঙ্গীমারী গ্রামের ক্লিনিক পাড়ার দিনমজুর রং মিস্ত্রী জমির উদ্দিন ও মা শরীফা বেগমের ছেলে। এক বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। জায়গা জমি বলতে বাড়ি ভিটে ৫ শতক জমি ছাড়া কিছুই নেই তাদের। দিনমজুরীর টাকায় সংসার চলে পরিবারটির। শরীফুল হাতীবান্ধা উপজেলার আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৫০ ও সরকারী হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলজ থেকে মানবিক বিভাগে এইসএসসিতে জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরিবারের দারিদ্রতা আর অভাব অনটনের মাঝে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ সকলই অভিভূত। তার ছোট বোন জেমি আক্তার স্থানীয় আদর্শ উচ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
শরীফুল ইসলাম এসএসসিতে বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও অর্থের অভাবে এইসএসসিতে মানবিক শাখায় পড়তে হয়েছে। প্রাইভেট কিংবা কোচিংয়ে পড়াশুনার সুযোগ হয়নি। টিউশনির টাকায় পড়াশুনা চালাতে হয়েছে তাকে। সে পড়াশুনার সুযোগ পেলে বিসিএস দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
শরীফুল বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ‘ডি’ ইউনিট ১৭৫২ তম স্থথান লাভ করে। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ এফ রহমান হলের প্রথম তলার ১২৭ নং কক্ষ থাকেন।
শরীফুল ইসলাস বলেন, অর্থ ছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে খুবই কষ্ট কর। পড়াশুনার খরচ চালানোর মতো সামর্থ নেই তার পরিবারের। বর্তমানে পড়াশুনা বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে। কোন ব্যাক্তি বা সংস্থা আমার পড়াশুনার খরচ বহন করলে পড়াশুনাটা চালিয়ে যেতে পারব।
শরীফুলের মা শরীফা বেগম বলেন, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এনজিও ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছেলেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছি। এখন তার পড়াশুনার খরচ চালাতে পারছিনা।
তার বাবা জমির উদ্দিন বলেন, অভাবের সংসারে ছেলে মেয়ের ইচ্ছে পড়াশুনা করার। কিন্তুু েেসই আমার সমর্থ নেই। দিনমুজরীর টাকায় ঠিকমতো সংসার চলে না। কেউ যদি আমার ছেলেকে পড়াশুনা করার ব্যবস্থথা করেন তাহলে আমার ছেলের স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার আশাটা পুরণ হতো। তা না হলে তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাবে।
এ বিষয় হাতীবান্ধা উপজলার সিংঙ্গীমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমজি মোস্তফা বলেন, শরীফুল ইসলাম অদম্য মেধাবী ও গরীব। তার পড়াশুনার খরচ কেউ বহন করলে সে তার কাখিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
কেউ তার সাথ যোগাযোগ করতে চাইলে নিম্নক্ত নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। শরীফুল ইসলাম ০১৭৮৩-২১৯৫১০