সরকারী সম্পত্তি রক্ষা করতে দুদকে মামলা হওয়ায় বগুড়ার আদমদীঘি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অভিযোগকারীর জমির দলিল রেজিস্ট্র করতে এসে বিলম্ব করা কে কেন্দ্র করে সান্তাহার ইউনিয়ন চেয়াম্যান ও সাব-রেজিস্ট্রারের মধ্যে বাকবিতন্ডা, দলিল আটকে রেখে হয়রানি ও এজলাসে উত্তেজনার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার কলসা মৌজার ৮ নং খতিয়ানে ১৬৭ দাগে ৩৩ শতক সম্পত্তিসহ মোট ১.১৮ শতক সম্পত্তি নওগাঁর স্নেহলতা রায়, শমরেন্দ্র রায়, ও বিরেন্দ্রনাথ রায়, ভারতবাসি হওয়ায় সরকারী গেজেটে ২০১২ ইং সালের ১৫মার্চ পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ক তালিকাভুক্ত করা হয়। সেই সরকারী সম্পত্তি আদমদীঘির সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ৩৯০৬ নং দলিল মুলে গ্রহীতারা ৯ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা বিক্রি দেখিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করেন। এ ঘটনায় সান্তাহার ইউনিয়ন চেয়াম্যান এরশাদুল হক টুলু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেন। পরে বিষয়টি দুদক সরেজমিনে তদন্ত শেষে আদমদীঘির সাব-রেজিস্ট্রার আবু ইউসুফসহ ১২জনের বিরুদ্ধে প্রতারনা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারী সম্পত্তি রেজিস্ট্রি ও ক্রয় সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমান আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এদিকে সান্তাহার ইউনিয়ন চেয়াম্যান এরশাদুল হক টুলু কলসা মৌজায় মহিউদ্দিন হিরার নিকট থেকে ৩ শতক জায়গা ক্রয় করে বুধবার ওই সম্পত্তি দলিল রেজিস্ট্রি করার জন্য সরকারী সকল নিয়ম কানুন মেনে সাব-রেজিস্ট্রার আবু ইউসুফের কাছে দলিল লেখক রুহুল আমিনের মাধ্যমে দাখিল করেন। এরপর দলিল ক্রেতা এরশাদুল হক টুলুর ছবি দেখে দুদকে অভিযোগকারী কে চিনতে পেরে দলিল রেজিস্ট্রি না করে আটকে রেখে কালক্ষেপন ও প্রায় আধা ঘন্টা তাকে এজলাসে দাঁড়িয়ে রেখে অন্যন্য দলিল রেজিস্ট্রি করতে থাকেন। এ সময় জমির ক্রেতা এরশাদুল হক টুলু জানতে চান তার দলিল রেজিস্ট্রি করতে বিলম্ব হচ্ছে কেন। এ সময় সব-রেজিস্ট্রার আবু ইউসুফ ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে সরকারী সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করা সংক্রান্ত দুদকে অভিযোগ করায় তার দলিল রেজিস্ট্রি করা যাবে না বলে জানায়। এ সময় সব-রেজিস্ট্রার আবু ইউসুফ ও জমির ক্রেতা এরশাদুল হক টুলু বাকবিন্ডায় ক্ষিপ্ত হলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,কে,এম আব্দুল্লা বিন রশিদ, কুন্দ্রগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেনসহ স্থানীয় নেতৃবর্গ বিষয়টি নিস্পত্তি করেন। পরে এরশাদুল হক টুলুর ওই জমি দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়।
এ ব্যাপারে সান্তাহার ইউনিয়ন চেয়াম্যান এরশাদুল হক টুলু জানান, সান্তাহার ইউনিয়নের সম্পত্তি জালিয়াতির ম্যাধমে দলিল রেজিস্ট্রি করায় ওই সাব-রেজিস্ট্রার আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করি। পরে আমার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে দুদকে মামলা হওয়ায় তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দলিল রেজিস্টি না করে কালক্ষেপন ও হয়রানি করেন। দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক সামছুল হক বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার সঠিক কাজ করেন নি। এরশাদুল হক টুলু উপর ক্ষিপ্তর বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার আবু ইউসুফ বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সে জন্য ক্ষিপ্ত হতেই পারি। আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,কে,এম আব্দুল্লা বিন রশিদ বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে রাগ অনুরাগ রাখা ঠিক নয়।