জাতিসংঘের জেনেভা অফিসের সামনে একটি প্রতীক ভাঙা চেয়ার রাখা হয়েছে একটি তাঁবুর পাশে। চেয়ারটি নামকরণ করা হয়েছে “বালুচদের রক্ষা করুন”। এই ক্যাম্পেইনটির মাধ্যমে কর্মীদের লক্ষ্য হচ্ছে, বালুচিস্তানের ছিন্নমূল জনগণের মানবিক অধিকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতন সমাজের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। বিক্ষোভকারীরা দাবী করছে বালুচিস্তানে পাকিস্তান সরকার সাধারণ মানুষের ওপর কেমন আচরণ করছে এবং তাদের ওপর যে মানবিক অধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন হচ্ছে সে ব্যাপারে জাতিসংঘ পূর্নাঙ্গ তদন্ত করে দেখুক এবং এসব রোধকল্পে তারা জাতিসংঘের জরুরি পদক্ষেপ কামনা করছে। “বালুচদের রক্ষা কর” প্রধান স্লোগান করে এ পদক্ষেপকে সেখানকার জনগণের সোচ্চার প্রতিবাদ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে এবং সক্রিয় কর্মীরা সেখানকার মানুষের প্রধান মৌলিক অধিকার যেমন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বায়ত্বশাসনের দাবীগুলো ফলাও করে তুলে ধরছে। বর্তমানে বালুচরা বলে শেষ করা যায় না এমন ধরণের অবর্ণনীয় অমানবিক, ধ্বংসযজ্ঞ ও দুঃখ-কষ্টের মধ্যে রয়েছে। বালুচিস্তানে বিস্তীর্ণ কবরভূমি খুঁজে পাওয়া গেছে যেখানে রাজনৈতিক কর্মীদের ও মানবাধিকার সংরক্ষণ বক্তাদের পাকড়াও করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে সেখানে গণহারে ফেলে দিয়ে কবর দেয়া হয়েছে। বালুচদের ওপর পাকিস্তানী প্রশাসকদের অন্যায্য শাসন অক্ষুন্ন রাখার জন্য তারা সামরিক বাহিনীর দ্বারা নিপীড়নের কৌশলটি বেছে নিয়েছে।
বালুচ জনগণকে কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি তারা পাকিস্তানের সাথে থাকবে কী না। এ ছাড়াও, তারা কখনোই পাকিস্তানের মতো গোঁড়া মতবাদের একটি দেশের সাথে নিজেদের মাটি সংযুক্ত করতে স্বীকার করে নেয়নি। পাকিস্তান সরকারও তাদের স্ব-ইচ্ছার সিদ্ধান্তকে স্বীকার করে নেয়নি।
পাকিস্তান নিজের মনগড়া গল্প বানিয়ে বলছে যে বালুচিস্তানের মানুষরা সুখী এবং তারা পাকিস্তানের অংশ হিসেবেই থাকতে চায়। এ মনগড়া প্রচারনাটি ভিত্তিহীন এবং সেখানে বসবাসরত বালুচদের প্রকৃত জীবনচিত্রকে বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।
বালুচদের মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি কোন বিকল্প ব্যবস্থা নয় বরং এটি একটি বাধ্যবাধকতার পথ। একজন বিক্ষোভকারীর ভাষায়, “বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা বেশ প্রলম্বিত হচ্ছে কিন্তু এটি কখনো এবং কোনদিনই অস্বীকার করা যাবে না।
এই সীমালঙ্ঘনের অবস্থা এবং জাতিসংঘের পাল্টা প্রতিরোধ ব্যবস্থার অভাবে জাতিসংঘ তার ম্যান্ডেটে উল্লেখিত মানবাধিকার সুরক্ষার কাজটি থেকে বিশ^ব্যাপী আস্থা হারাচ্ছে। এ বিষয়টিতে জাতিসংঘের নীরবতা মানেই সেখানে গণহত্যার সংস্কৃতিকে সমর্থন যোগানো।