‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০’ থেকে কথা সাহিত্যিক এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদের নাম প্রত্যাহারের প্রতিবাদে নড়াইলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে আদালত চত্বরে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।
কবি ও সাংবাদিক সাথী তালুকদারের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা শেখ নওশের আলী, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পরিতোষ বাগচী, সাংবাদিক অশোক কুন্ডু, নিরাপদ সড়ক ও রেলপথ বাস্তবায়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম, কবি যাযাবর মুনীর, কবি আবু বক্কার, সাংবাদিক হুমায়ুন কবির রিন্টু প্রমুখ। সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে মানববন্ধনে কবি, শিল্পী, সাহিত্যিকসহ পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুমড়ি গ্রামের কৃতী সন্তান কথা সাহিত্যিক এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কারে মনোনীত হন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এরপর একটি কুচক্রীমহল রইজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নামে। ১২ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশোধিত গেজেটে ‘স্বাধীনতা পদক’ থেকে রইজ উদ্দিনের নাম বাদ দেয়া হয়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে রইজ উদ্দিনের নাম পুনঃরায় অন্তর্ভূক্তির দাবি জানান বক্তারা।
জানা যায়, রইজ উদ্দিনের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩০টি। এ ছাড়া সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা একশ’ বেশি। তিনি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছড়া, আঞ্চলিক ইতিহাস, ভ্রমণ কাহিনী, কাহিনি কাব্য, ইতিহাস-ঐহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান, রম্য রচনা, গবেষণা গ্রন্থ, বয়স্ক শিক্ষার বই, সম্পাদনা বই, প্রশিক্ষণ গাইডসহ বিভিন্ন ধরণের বই লিখেছেন।
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ ১৩টি পুরস্কার লাভ করেছেন। এবার স্বাধীনতা পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিলেন রইজ উদ্দিন। পরে তার নাম প্রত্যাহার করা হয়। আগামী ২৫ মার্চ সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ প্রদান করবেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদের বাবার নাম তাহাজ্জুদ্দিন আহম্মদ ও মায়ের নাম মনু বিবি। পৈতৃক নিবাস নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুমড়ি গ্রামে হলেও চাকুরি সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে খুলনা শহরের বসুপাড়া বাঁশতলা এলাকায় বসবাস করছেন। বাংলা সাহিত্যে এম এ পাসসহ এলএলবি ও হোমিওপ্যাথিতে ডিএইচএমএস করেছেন। খুলনা বিভাগীয় উপভূমি সংস্কার কমিশনার (যুগ্মসচিব) থেকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি অবসরে গেছেন রইজ উদ্দিন। এদিকে ১৪টি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন তিনি। স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও পুত্রবধূদের নিয়ে সংসার তার।