কলমাকান্দার জনতা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ল্যাপটপ চুরির ঘটনা (১৮ মার্চ) বুধবার ২২ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কুল কিনারা হয়নি। এতে করে আইসিটি শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। দেখা দিয়েছে অভিবাবক ও এলাকাবাসীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
এবিষয়ে সরেজমিন গত সোমবার ঘুরতে গিয়ে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায় - আদৌ চুরি হওয়া ল্যাপটপগুলো উদ্ধার হয় কিনা সন্দেহ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বিদ্যায়লয়ের শিক্ষার্থী ও অভিবাবক এবং এলাকাবাসী। এলাকাবাসীদের প্রশ্ন কার স্বার্থে নিরব রয়েছেন প্রধান শিক্ষক। চুরি হওয়া ল্যাপটপ গুলোকে অতিদ্রুত খুঁজে বের করার অথবা আইসিটি শিক্ষার জন্য পুনরায় অতিদ্রুত ১৬টি ল্যাপটপের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান অত্র স্কুলের শিক্ষকদের খাম-খেয়ালীপনার কারণে ল্যাপটপ উদ্ধারের কোন খবর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এ প্রতিষ্ঠানের আশপাশের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা এ চুরি ঘটনাকে রহস্যজনক বলছেন। তবে চুরির ব্যাপারে স্কুল শিক্ষক জড়িত নাকি বাহিরের লোক জড়িত এখনো পরিস্কার হওয়া সম্ভব হয়নি। সন্দেহভাজনদেরকে আটক করে জিজ্ঞসাবাদ করা হলে ল্যাপটেপ চুরির ঘটনাটি বেরিয়ে আসতে পারে।
উপজেলার জনতা উচ্চবিদ্যালয় থেকে গত (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে কে বা কারা গ্রীল ও দরজার তালা ভেঙ্গে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে কক্ষে থাকা ১৬টি ল্যাপটপ ও অফিস কক্ষ থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রাদিসহ আনুষঙ্গিক আরো অনেককিছু চুরি করে নিয়ে যায়। যার মূল্য আনুমানিক ৪ লক্ষ ৩২ হাজার ৯৫০ টাকা। পরের দিন সকাল প্রায় ৯টায় ওই প্রতিষ্ঠানের খন্ডকালীন নিয়োগপ্রাপ্ত পাহাড়াদার সেকুল মিয়া দেখেন গ্রীল ও দরজার তালা ভাঙ্গা, ল্যাপটপ নেই। তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমান খানকে জানান। পাহাড়াদার দেয়া সংবাদ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক স্কুলে ছুটে যান প্রধান শিক্ষক। পরে চুরির বিষয়টি উপজেলার প্রশাসন ও থানার পুলিশকে অবগত করেন। পরে ওই দিন বিকালে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমান খান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কলমাকান্দা থানায় একটি চুরি মামলা দাযের করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এফএম ওয়াজেদ আলী তালুকদার তিনি বলেন চুরি ঘটনাটি অবগত হয়ে বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। ওই চুরি ঘটনায় যত ধরণের রহস্য থাকুক না কেন পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করে প্রকৃতদোষীদের বের করে নিয়ে আসবেন সে যেই হোক না কেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা বলেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আমাকে চুরি ঘটনাটি জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষককে থানায় একটি চুরি মামলা করার জন্য নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি উপজেলার আইসিটি বিশেষজ্ঞ মো. রফিকুল ইসলাম কে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রালয়ে প্রেরণ করা জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে কলমাকান্দা থানার ওসি (তদন্ত) মো. সিরাজুল ইসলাম খান বলেন চুরি ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সন্দেহভাজন রুবেল মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার জিজ্ঞাসাবাদ করে জেল হাজতে প্রেরণে করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তার দেয়া তথ্য গুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি অচিরেই চুরি ঘটনা রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।