নেত্রকোনার মদনে এক কিশোরী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ভিকটিমের বাবা বিচার চেয়ে ধর্ষক জুয়েলসহ ৬জনকে আসামি করে নেত্রকোনার মদন কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দেওসহিলা (দক্ষিণকান্দা) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে মঙ্গলবার গভীর রাতে মদন হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে নিয়ে এলে তার অবস্থা আশংকাজনক থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরার্মশ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
বৃহস্পতিবার তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিশোরীটি বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৯ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে একই বাড়ির আবু বক্করের স্ত্রী নাসিমার ঘরে রাতে ঘুমাতে যায় কিশোরী মেয়েটি। পাশের বাড়ির সেলিমের ছেলে জুয়েল হঠাৎ ঘরে প্রবেশ করে তাকে উক্ত্যক্ত করতে থাকে। একপর্যায়ে সে রাগান্বিত হয়ে উঠলে নাসিমা তার মুখে ওড়না দিয়ে চেপে ধরে। এ সময় জুয়েল তাকে জোড় পূর্বক ধর্ষণ করে হুমকি দিয়ে বলে ঘটনাটি প্রকাশ করলে তোর পিতা-মাতাসহ পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলবো। এভাবে আরো কয়েক বার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
মেয়েটি ভয়ে চেপে রাখলেও তার শাররীক অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে থাকলে মা-বাবাকে বিষয়টি খোলে বলে।
ভিকটিমের বাবা বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও বিচার না পেয়ে গত ১০ মার্চ ২০২০ ইং তারিখে নিজেই বাদি হয়ে ধর্ষকসহ ছয়জনকে আসামি করে নেত্রকোনার মদন কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
ধর্ষিতার বাবা হানিফ মিয়া জানান. আমার মাদ্রাসা পড়-য়া ৫ম শ্রেনির মেয়েকে ভয়ভীতি প্রর্দশন করে একই গ্রামের সেলিমের লম্পট ছেলে জুয়েল জোড় পূর্বক ধর্ষণ করে। সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে গেলে ঘটনাটি আমাদের কাছে প্রকাশ করে। আমি বিভিন্নস্থানে ঘুরে ন্যায় বিচার না পেয়ে নেত্রকোনার মদন কোর্টে মামলা করেছি। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
ধর্ষনের শিকার মেয়েটি জানায়,আমি ন্যায় বিচার চাই। আমার সন্তানের পরিচয় চাই।
জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার মোঃ সাইফুল্লাহ সজিব জানান, ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক কিশোরী মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে এলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।
ধর্ষক জুয়েলের পিতা সেলিম মিয়া এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাতাব্বরগণ বিচারে যে রায় দিবে আমি তা মেনে নেব।
ওসি মোঃ রমিজুল হক জানান, আমরা প্রাথমিক তদন্ত করেছি। কোর্ট থেকে আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মামলার পর বিষয়টি জেনেছি। এলাকায় গিয়েছিলাম। ঘটনা সত্য। কিশোরী মেয়েটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।