বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্লাবন ভূমি উপ-কেন্দ্রের আওতায় বিলুপ্ত প্রায় স্বাদু পানির কুঁচিয়া মাছের চাষ করে আসছে বগুড়ার আদমদীঘির উপজেলা সদরসহ সান্তাহার পৌর শহরের আশেপাশের কিছু মাছ চাষীরা। এই কুঁচিয়া মাছ মূলত দেশের কিছু ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিকরা খেলেও এই মাছের প্রধান বাজার হচ্ছে চায়নাসহ বিশ্বের আরো কিছু দেশ। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে এই বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে কুঁচিয়া মাছ চাষীরা।
জানা গেছে, বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্লাবন ভূমি উপ-কেন্দ্রটি। এই কেন্দ্র থেকে সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে অধিক লাভ জনক বিলুপ্ত প্রায় স্বাদু পানির এই কুঁচিয়া মাছ চাষ করে আসছে আদমদীঘি, সান্তাহারে আশেপাশের বেশ কিছু মাছ চাষীরা। দেশে এই মাছের বাজার না থাকায় প্রধানত চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইলান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই অধিক লাভ জনক মাছ রপ্তানি করা হয়। তাই এই মাছে লাভের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বিদেশের কুঁচিয়া মাছের লাভ জনক বাজার। দেশে এই মাছের বাজার ও গ্রাহক না থাকায় এই অঞ্চলে উৎপাদিত সুস্বাদু কুঁচিয়া মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মাছ চাষীরা। এই করোনা ভাইরাসের কারণে বর্তমানে লাভ জনক কুঁচিয়া মাছ চাষীদের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিলুপ্ত প্রায় স্বাদু পানির এই কুঁচিয়া মাছ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন অনেক মাছ চাষীরা।
সান্তাহার পৌর শহরের উপর পোঁওতা গ্রামের কুঁচিয়া মাছ চাষী জহুরুল, জাহাঙ্গির, সাবানাসহ অনেকেই বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে বর্তমানে এই কুঁচিয়া মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। বিগত সময়ে পাইকাররা এসে পুকুর থেকে এই কুঁচিয়া মাছ নিয়ে যেতো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে বিদেশের বাজার বন্ধ হওয়ায় পাইকাররা কুঁচিয়া কিনছেন না। তাই মাছ নিয়ে কি করবো আমরা ভেবে পাচ্ছি না।
সান্তাহারের বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্লাবন ভূমি উপ-কেন্দ্রর প্রধান ড.ডেভিট রিন্টু দাস বলেন, বিগত কয়েক বছর যাবত স্থানীয় মৎস্য চাষীদের বিভিন্ন ভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ও বিভিন্ন উপকরন বিতরন করাসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে এই লাভ জনক কুঁচিয়া মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। এই মাছ চাষ করে চাষীরাও অনেক লাভবান হয়েছেন। চাষীদের পাশাপাশি আমরাও এই উপকেন্দ্রে সুস্বাদু বিলুপ্ত প্রায় স্বাদু পানির কুঁচিয়া মাছ বার্ণিজিক ভাবে উৎপাদন করে আসছি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে কুঁচিয়া মাছের বিদেশী বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাষীরা এই কুঁচিয়া মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে।