বগুড়ার ধুনটে কোন প্রকার টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই মাঠপাড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রায় ১০/১২ লাখ টাকা মূল্যের ১৩২টি বনজ গাছ মাত্র ২ লাখ ৬২ হাজার টাকায় নিলাম ডাকে বিক্রি করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।
অবশিষ্ঠ টাকা ম্যানেজিং কমিটি, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ইউএনও অফিস ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়া হয়েছে। আর এতে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক সহ স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানাগেছে, ধুনট উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাঠপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯৩ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি স্থাপনের পর চারিদিকে মেহগনি, আকাশ মনি, ইউকিল্যাপটাস সহ বিভিন্ন প্রজাতির দেড় শতাধিক বনজ গাছ রোপন করা হয়।
মাঠপাড়া গ্রামের আবদুল লতিফ, সিরাজুল হক, আজিজার রহমান জানান, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করতে কোন প্রকার টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি বা প্রচার করা হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মানেজিং কমিটি ইউএনও অফিসের মাধ্যমে গত ৮ জানুয়ারী নিলাম ডাকের কাগজ কলমে ৮৮টি গাছ মাত্র ২ লাখ ৬২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। তবে নিলাম ডাকে ৮৮টি গাছ কাঁটার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক ও মানেজিং কমিটি মোট ১৩২ টি গাছ কেটে বিক্রি করেন। কিন্তু ১৩২টি গাছ ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হলেও কাগজ কলমে বিক্রি দেখানো হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৬২ হাজার টাকায়। আর বাকি টাকাগুলো ম্যানেজিং কমিটি, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ইউএনও অফিস ও কতিপয় নেতাকর্মীরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের এসব গাছ বিক্রির টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ না করায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য ম্যানেজিং কমিটির সিন্ধাতে ইউএনও অফিস গাছ বিক্রি করেছেন। তবে একটি টাকাও তিনি উত্তোলন করেনি বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাল মিয়া জানান, ইউএনও অফিস নিলাম ডাকের মাধ্যমে ৮৮টি গাছ বিক্রি করে বিদ্যালয়ের এ্যাকাউন্টে ২ লাখ ৬২ হাজার টাকা জমা করেছে। সেখান থেকে টাকা তুলে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী ওয়াল নির্মান করা হচ্ছে। তাছাড়া অতিরিক্ত গাছ বিক্রি করে টাকা লোপাট করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে প্রতিটি গাছের মূল্য নির্ধারনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাদের নির্ধারিত মূল্যের ওপর প্রকাশ্যে নিলাম ডাক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিলাম ডাক অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল। তাই গাছ বিক্রি করতে তিনি বা তার অফিসের কেউ কোন অনিয়ন করেনি বলে তিনি দাবি করেন।