কালিগঞ্জে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। পৃথক অভিযানে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৌতলা, কদমতলা ও রতনপুর বাজারের ৯ ব্যবসায়ীর নিকট থেকে মোট ১ লাখ ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
জানা যায়, কালিগঞ্জের সর্ববৃহৎ কাঁচামালের বাজার হিসেবে খ্যাত মৌতলায় শনিবার (২১ মার্চ) সকালে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত উদ্দীন। এ সময় তিনি কেনা দামের চেয়ে অনেক বেশী দামে পেঁয়াজ ও রসুন বিক্রির অপরাধে ব্যবসায়ী মধুসুধন ঘোষ ও আবদুল খলিলকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরবর্তীতে একই আদালত উত্তর কালিগঞ্জ তারালী মোড়ের পাশে অবস্থিত মা লক্ষ্মী ভান্ডারে অভিযান চালিয়ে বেশী মূল্যে চাউল বিক্রির অপরাধে ব্যবসায়ী বরুণ কুমার ঘোষকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে প্রথমে কালিগঞ্জের রতনপুর ইউনিয়নের কদমতলা বাজারে এবং পরবর্তীতে রতনপুর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৬ ব্যবসায়ীর প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক রাসেল। এ সময় ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধারায় ১১ ও ১২ নম্বর পৃথক মামলায় কদমতলা বাজারে ৪০ টাকায় পেঁয়াজ কিনে ষাট টাকায় বিক্রির অপরাধে চারজনকে দশ হাজার টাকা করে মোট চল্লিশ হাজার টাকা এবং রতনপুর বাজারে ১১০ টাকায় রসুন কিনে ১৫০ টাকা বিক্রি করার অপরাধে দুই জনকে দশ হাজার টাকা করে মোট বিশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে প্রত্যেককে পনের দিনের কারাদ- প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার খুব্দীপুর গ্রামের মৃত মনোহার গাইনের ছেলে মোক্তার হোসেন গাইন, কাটুনিয়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আসাদুল ইসলাম, নুর মোহাম্মাদের ছেলে ওমর সানি ও নুরুল আফসারের ছেলে হাবিুবুল্যাহ, রতনপুর গ্রামের মজিদ খলিফার ছেলে মশিউর রহমান ও মহিষকুড় গ্রামের মৃত বক্স গাজীর ছেলে মমিন আলি গাজী।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদি উপস্থিত থেকে সকলকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন হওয়ার এবং গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সকল ফার্মেসীতে জ¦র, সর্দি ও কাশির ওষুধ বিক্রয় করলে তা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করা এবং তাদের নাম ঠিকানা লিখে রাখার নির্দেশ দেন। বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, বিদেশ ফেরৎ বা করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহিৃত ও বাজার মনিটরিংয়ের লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিটি ইউনিয়নে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কালে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন, এস আই তরিকুল ইসলাম, এস আই আসমত হোসেন ও এএস আই আরিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।