কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে লাগামহীনভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও নেই প্রশাসনের নজরদারী এবং বাজার মনিটরিং। করোনা ভাইরাসের প্রকোপে চাহিদার তুলনায় নিত্যপণ্য কম থাকায় এবং অনেকেই চাল ডাল মজুদ রাখায় এসব পণ্যের দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার কয়েক এলাকার বাজার ঘুরে জানা গেছে অধিকাংশ বাজারেই নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে চালের দাম একেবারেই লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। বাজারগুলেতো ৫০ কেজি ওজনের বস্তা যেখানে বিক্রি হতো ১হাজার ৭শ থেকে ১হাজার ৮শ টাকা সেখানে এসব বস্তা এখন বিক্রি হচ্ছে ২হাজার ৪শ থেকে ২হাজার ৬শ টাকা পর্যন্ত। অপরদিকে পোঁয়াজের দাম ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকায়। এছাড়াও ডাল, সবজিসহ অন্যান্য দ্রব্যমূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে অধিকহারে। মাত্র দুই-তিনদিনের ব্যবধানেই প্রতি বস্তা চালের দাম বেড়েছে ৩শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এবং বেশি দামে কেনার কারণেই বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এছাড়াও চালের দামের ব্যাপারে মিলার এবং বড় ব্যবসায়ীদেরও দায়ি করছেন তারা।
পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী তাদের নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছেন বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্রেতারা। এছাড়াও প্রশাসনের সঠিক নজরদারী এবং বাজার মনিটরিং না থাকাকেও দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
আবু হানিফ নামের এক ক্রেতা জানান তিনি আগে ২ হাজার ২শ টাকা দরে ২৮ ধানের চাল কিনতেন। দুদিন আগে তিনি কিনেছেন ২ হাজার ৫শ টাকা দরে। তিনিও বেশি করে চাল কিনে মজুদ করে রেখেছেন।
নাগেশ্বরী পৌর বাজারে বাজার করতে আসা আবু সিদ্দিক নামের এক ক্রেতা জানান তিনি পন্যের দাম বাড়ার কথা শুনে বেশি দামেই ৩ বস্তা চাল, ৫ কেজি পেঁয়াজ, ৫ কেজি ডাল এবং ১০ কেজি আলুসহ অন্যান্য পণ্য কিনে মজুদ করে রেখেছেন।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ রওশন কবীর বলেন, এসিল্যান্ড এবং ইউএনও না থাকায় বাজার মনিটরিংয়ের জন্য যে অভিযান তা পরিচলনা করা যায়নি। তবে মসজিদের ইমাম এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে। এছাড়াও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ মাসুমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি আগামীকাল (২৩ মার্চ, সোমবার) থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।