চিরিরবন্দর উপজেলার দুটি গ্রামের মাঝদিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর উপর বাঁশের তৈরি সাঁকোই ভরসা হাজারো মানুষের। শুষ্ক মৌসুমে ভোগান্তিতে নদীর উপর দিয়ে পারাপার হলেও বর্ষার সময়ে এই সাঁকোই একমাত্র ভরসা। কিন্তু নদীর উপর নড়বড়ে বাঁশের তৈরি সাঁকোটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় নদীর দু’পাড়ের ওই এলাকায় কেউ বিয়ে করতে রাজী হন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, প্রতিদিন নদী পারাপারে হাজারো মানুষের ভরসা চিরিরবন্দরের আব্দুলপুর ইউনিয়নের দিঘারন গ্রাম ও ইসবপুর ইউনিয়নের ইয়াকুবপুর গ্রামের মাঝে বাঁশের এ সাঁকোটি। এই সাঁকোর দু’পাশেই মাটির নিচু রাস্তা পেরিয়ে বাঁশের সাকো পার হতে নিত্যদিনের দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকার মানুষকে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন, মাইক্রোবাস, অটোচার্জার চলতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা, শিক্ষা ব্যবস্থা। এই নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়েই নদী পার হয় চিরিরবন্দর ও পার্বতীপুর উপজেলার কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ। এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি এইস্থানে একটি সেতুর।
স্থানীয় প্রধান শিক্ষক মোরশেদ উল আলম জানান, সাঁকোর উভয়দিকের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে নদী পারাপারে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এতে বাজার মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
মামুদপুর গ্রামের সাজেদুল ইসলাম ও দিঘারণ গ্রামের আবদুর রউফ জানান-প্রতিদিন বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। গর্ভবতী মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীদের এ সাঁকোর উপর দিয়ে পার করা যেমন ভীতিকর তেমনি খুব কষ্ট ও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে রোগীসহ পণ্য পরিবহনে বিকল্প পথে ৫/৬কিলোমিটার ঘুরে পার্বতীপুর উপজেলার ভবেরবাজার কিংবা বিন্নাকুড়িহাট হয়ে চলাচল করতে হয়।
আব্দুলপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. নুর ইসলাম শাহ্ জানান-ব্রিজটি নির্মাণ করা জরুরি। এ্যাম্বু^ুলেন্স, মাইক্রোবাস প্রবেশ করতে না পারায় রোগীদের সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয়। এ ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার জানিয়েছে। কিন্তু এখনও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি আরো জানান-নদীটির কারণে এপারের মানুষের জমি ওপারে এবং ওপারের মানুষের জমি এই পারে পড়েছে। এতে উৎপাদিত পণ্য পারাপারে খুব সমস্যায় পড়ছেন তারা। নদীতে ব্রিজ নির্মাণ হলে আশপাশের গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টানোর পাশাপাশি বদলে যাবে গ্রামীণ অর্থনীতিও।