ইতালির স্বপ্ন দেখছিনা আর। বড় স্বপ্ন দেখতে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়েছি, কারাবাসও ভাগ্যে জুটেছে। এখন কোয়েল পাখি নাড়াচাড়া করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই আছি। কথাগুলো বলছিলেন মনিরামপুর পৌর এলাকার হাকোবা গ্রামের যুবক আজাহারুল ইসলাম। সে এখন বাণিজ্যিক হিসেবে বাড়িতে গড়ে তুলেছে কোয়েল পাখির খামার। নিজের ভাগ্যবদলের জন্য সেই সাথে বাচ্চা তৈরির জন্য খামারে ইনকিউবেটর ও হ্যাচিং ম্যাশিন বসিয়েছেন।
রোববার সরেজমিন তার কোয়েল পাখির খামারে গেলে কথা হয় যুবক আজাহারুল ইসলামের সাথে। আলাপচারিতায় সে জানায়, ইনকিউবেটর ও হ্যাচিং ম্যাশিনের ইনকাম এখনও হাতে আসেনি। খামারে বর্তমান ৫ হাজার পাখির পরিচর্যা করা হচ্ছে। এ থেকে মাসিক গড়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা মতো ইনকাম আসছে। এর পরেই চলছে বাব-মা ও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সংসার। হ্যাচিং এবং ইনকিউবেটর এর ইনকাম হয়তোবা এ মাসের মধ্যেই শুরু হবে। যে কারণে ম্যাশিনে কয়েক স্তরে ডিম বসানোর কাজ চলছে। ম্যাশিনে এক সঙ্গে ৪৫ হাজার ডিম বসিয়ে বাচ্চা ফুটানো সম্ভব হবে। বর্তমানে ম্যাশিনে ৮ হজার কোয়েল পাখির ডিম বসানো হয়েছে বলেও সে জানায়। আশা করা হচ্ছে ছোট্ট এই পরিসরে মাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকামের উদ্দেশ্য নিয়েই আমার এই কার্য্যক্রম আরম্ব করা হয়েছে।
গত দু’বছরের মতো বেঁচে থাকার জন্য কোয়েল পাখি নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বোনা হচ্ছে। এইচএসসি পাশ যুবক আজাহারুল ২০১৯ সালের ১মে অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে। একপর্যায়ে লিবিয়ায় পৌঁছিয়ে সেখানে ৬ মাস অবস্থানের পর প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে। শেষ পর্যন্ত দেড়মাস কারা ভোগের পর দেশের মাটিতে এসে বাব-মা ও স্ত্রী-সন্তানদের কোলে পৌছায়। আজাহারুল জানায়, বড় স্বপ্ন নিয়েই ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে পাড়ি জমিয়ে ছিলাম। আর এরজন্য ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকাও দালালে খেলো। শেষ পর্যন্ত জেল-জরিমানা ভোগ করে বাড়িতে ফেরা। সব হারিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এখন ভালোই আছি। বেঁচে থাকার জন্য নতুন করে স্বপ্ন দেখছি কোয়েল পাখির মাঝ দিয়ে। প্রাথমিক ভাবে ক’মাস মাসিক ২৫-৩০ হাজার টাকা রোজগার সম্ভব হলেও, আশার করা হচ্ছে এ থেকে আমার স্বপ্ন পূরন হবে।
তবে, এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক কোন সহযোগীতা পেলে আজাহারুল ইসলাম কোয়েল পাখি পালন এবং বাচ্চা ফোটানোর কার্যক্রম আরো দ্রুত এগিয়ে নিতে পারবে বলে আশাবাদি।