প্রাণঘাতী করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সাজেকের লুঙথিয়ান পাড়ায় সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে আরো এক শিশু মৃত্যু হয়েছে। গত দুই দিনে দুই শিশু পদরাণী ত্রিপুরা (৯), খেতী রানী ত্রিপুরা (১৩)সহ ২৪ দিনে মোট ৭জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সীমান্তবর্তী দুর্গম লুঙথিয়ান পাড়ায় হামে আক্রান্ত হয়ে আরো এক শিশুর মহেন ত্রিপুরা (১২) একটু খারাপ অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা।
রাঙ্গামাটি সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা আরো জানান, ইতিমধ্যে সাজেকের তিনটি গ্রামে ৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। তার মধ্যে মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিজিবির হেলিকপ্টার করে ইপিআই প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ মাওলা বক্স চৌধুরীর নেতৃত্বে বিশ্ব স্ব্যাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) ডাঃ আরিফুল ইসলামসহ ঢাকা থেকে ৪ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল সাজেক যাচ্ছেন। এই নিয়ে ১৮ জন ডাক্তার ও নার্স সেবা দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ত্রিপুরাদের একটি ভ্রান্ত ধারণার কারণে তারা অসুস্থ বেশী হচ্ছে। তাদেরকে আমরা হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসার জন্য গেলেও তারা আসতে চাচ্ছে না। তিনি বলেন, তাদের মাঝে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। তাদের ত্রিপুরা কমিউনিটির লোকজনকেই এই উদ্যোগ নিতে হবে।
সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলশন চাকমা এ তথ্য নিশ্চিত জানান, সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী তিনটি গ্রামে গত কয়েক দিনে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এই রোগে ইতিমধ্যে ৬ শিশু মারা যাওয়ার পর সোমবার রাতে আরো এক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া ৭নং ও ৮নং ওয়ার্ডের লঙথিয়ানপাড়া, অরুণপাড়া, কমলাপুর, কাইশ্যোপাড়া এলাকায় এখনও প্রায় শতাধিক শিশু হামে আক্রান্ত বলে জানান নেলশন চাকমা।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইসতেখার আহম্মদ বলেন, সাজেকের দুর্গম এলাকায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রথম শিশুকন্যার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমাদের ৮সদস্যের একটি মেডিকেল টিম সেখানে চিকিৎসা দিচ্ছে। প্রথম ৫জনের মৃত্যুর পর অবস্থার উন্নতি হলেও লুঙথিয়ান পাড়ায় রবিবার রাত ১২টার দিকে এক শিশুর ও সোমবার রাতে আরো এক শিশুর মৃত্যু হয়। এনিয়ে লুঙথিয়ান পাড়ায় দুইদিনে ২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এলাকাটি এতোই বেশী দুর্গম যে সাজেক পর্যটন কেন্দ্র হতে পায়ে হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। গ্রামগুলোতে পৌছাতে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ ঘন্টারও বেশী সময় লাগে। দুর্গম এই এলাকায় যেতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদেরকে সরঞ্জাম নিয়ে দারুন ভাবে বেগ পেতে হচ্ছে।