দেশব্যাপী প্রাণঘাতী করোনার আতঙ্কে মানুষের জীবন যাত্রায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের হাট বাজারে কমে গেছে মানুষের আনাগোনা। ধীরে ধীরে সবকিছু বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আয় রোজগার কমে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবি মানুষের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না এনজিও‘র কিস্তি আদায় কার্যক্রম। গত সোমবার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এনজিও গুলোকে কিস্তির জন্য চাপাচাপি না করার নির্দেশ দিলেও তা মানা হচ্ছে না। অনেকটা জোর জবরদস্তি করে কিস্তির টাকা আদায় করছেন বলেও অভিযোগ করেন ভূক্তভোগিরা। মঙ্গলবার দিনভর জেলার উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, এ উপজেলায় ব্রাক, গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, টিএমএসএস,আরডিআরএসসহ বেশ কয়েকটি এনজিও ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু দেশব্যাপী প্রাণঘাতী করোনার আতঙ্কে উপেক্ষা করে মঙ্গলবার সকাল থেকে এসব এনজিও‘র মাঠ কর্মিরা বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য বেরিয়ে পড়ছেন। এতে এনজিও কর্মী ও ঋণগ্রহীতা উভয়ের জন্য করোনাভাইরাস সংক্রমনের মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। একদিকে করোনা আতঙ্ক অন্য দিকে কিস্তির টাকা এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এমন পরিস্থিতিতে কিস্তির টাকা আদায়ে বন্ধের দাবি জানান ভুক্তভোগিরা।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের দড়ি কিশোরপুর গ্রামে গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠ কর্মী প্রতিমা রাণী ঋণ আদায়ের জন্য যান। এ সময় কয়েকজন ঋণগ্রহীতা কিস্তির টাকা দিতে অস্বৃকীতি জানালে তিনি বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। শুধু তাই নয় উপজেলার ধামশ্রেনী, কাশিয়াগাড়ি, হাতিয়া, গোয়ালপাড়া, কাশির খামারসহ বিভিন্ন এলাকার খেঁটে খাওয়া মানুষের কাছে অনেকটাই চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায়ের মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দড়ি কিশোরপুর গ্রামের সাজেদা বেগম, শাহাজাদী বেগম, আছিরন বেগম, কাশিয়াগাড়ী গ্রামের রাশেদা বেগম, স্বপ্ন রাণী, হাতিয়া গ্রামের শিউলি বেগমসহ অনেক ঋণগ্রহীতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকালে কিস্তি আদায়ের লোক এসে কিস্তি চায়, কিন্তু কয়েকদিন ধরে কাজকর্ম না থাকায় কিস্তির টাকা জোগার করে রাখতে পারি নাই। কিস্তির টাকা দিতে না চাইলে পরবর্তিতে ঋণ দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। তাই নিরুপায় হয়ে ধার দেনা করে কিস্তির টাকা দিয়েছি।
গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠ প্রতীমা রাণীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক হাতিয়া শাখার ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, কিস্তি আদায়ের ব্যাপারে আমরা কোন ম্যাসেজ পাইনি, তবে জোনাল অফিসে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।