সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারী আকারে দেখা দিলে বাংলাদেশ সরকার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বুধবার থেকে সারাদেশ লকডাউন করে দিলেও বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রেজওয়ানুর বলছেন করোনা পরিস্থিতি এখনো জটিল হয়নি। সারাদেশে করোনা ভাইরাসে সক্রমন ও মারা গেলেও এনিয়ে তার যেন কোন মাথা ব্যাথাই নেই। গতকাল তিনি দিনভর ব্যস্ত ছিলেন ৩৮ লক্ষ টাকার এম এস আর ক্রয়ের টেন্ডার গুছ নিয়ে। অথচ এ টেন্ডারের বিষয়ে কোন কিছুই জানেন না হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বুধবার থেকে সারাদেশ লক ডাউন করার ঘোষণা এবং সামাজিক দূরত্ব তৈরি করতে মাঠে সেনাবাহিনী নামালেও টিএইচও বলছেন করোনা নিয়ে জটিল কোন পরিস্থিতি হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স'র ২০০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ৩৮ লক্ষ টাকার এমএসআর মেডিসিন, সার্জিক্যাল সরঞ্জাম, লেলিন সামগ্রী, আসবাবপত্র, কেমিক্যাল রিজেন্ট) ক্রয়ের জন্য সম্প্রতি টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এতে মাত্র সাতজন ঠিকাদার ফরম সংগ্রহ করেন এবং গতকাল জমাদানের দিনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পছন্দের তিনজন ফরম জমা দেয়। আবার আবরার এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার নুরুল আলম ও জেড এ ইন্টারন্যাশনালের ঠিকাদার মোঃ জাহিদুল ইসলাম ফরম জমা দিতে গেলেও তাদের ফরম জমা রাখেননি টিএইচও। তাদের অভিযোগ টিএইচও তার পছন্দের একজনকে টেন্ডার পাইয়ে দিতে তিনটি ফরম জমা নিয়েছেন। একাধিক ঠিকাদার বলেন, সরকার বুধবার সারাদেশ লকডাউন ঘোষণা করে সর্বসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। যে কারণে তারা কেউ ঘরের বাহিরে বের হতে না পারায় ফরম জমা দিতে পারেননি। এ কারণে তারা গতকাল ফরম জমা দেয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নিকট ফরম জমা দিতে সময়ের আবেদন করেন। তাছাড়া তাদের ধারণা ছিল সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে টিএইচও চরম জমাদান স্থগিত রাখবেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ রেজওয়ানুর বলেন, আপনি জানেন আমি দৈনিক কীর্তনখোলা পত্রিকার মালিক। আপনি এসেছেন আমার সাক্ষাৎকার নিতে। করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার সারাদেশে লকডাউন করে দিলেও তার ভিতরে আপনি কি করে ফরম জমা নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন করোনা পরিস্থিতি এখনো জটিল হয়নি। একপর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আমি আমার সিদ্ধান্তে সব কিছু করেছি। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাসপাতালের এমএসআর ক্রয়ের টেন্ডার দেয়ার বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি। তাছাড়া সরকার সারা দেশে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন করে দিয়েছেন। এর ভিতর তড়িঘড়ি করে টেন্ডার আহবান করার কি দরকার। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান। বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক কীর্তনখোলা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালেহ টিটুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডাঃ রেজওয়ানুর নামে তাদের পত্রিকায় কোন মালিক নেই। তিনি যদি কীর্তনখোলা পত্রিকার ভুয়া মালিক পরিচয় দিয়েছেন। তাছাড়া যেই অনিয়ম করে ৩৮লক্ষ টাকার টেন্ডার গুছ করুক না কেন তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করবেই। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেখানে তিনি তা না করে ব্যস্ত রয়েছেন টেন্ডার গুছ নিয়ে। এনিয়ে উপজেলা সুশীল সমাজের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের যেকোনো মুহূর্তে বিক্ষোভে রূপ নিতে পারে।