কুড়িগ্রামের উলিপুরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবং প্রতিরোধ করতে বিশ্বের কয়েকটি দেশ থেকে আসা লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রশাসন। কিন্তু এসব নির্দেশনা কে তোয়াক্কা না করে অবাধে সর্বত্রই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। কেউ কেউ আবার এ সুযোগে গোপনে বিয়েও করে ফেলেছেন। ফলে স্থানীয় লোকজনের মাঝে করোনা সংক্রমণ হওয়ার চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, দেশব্যপি যখন প্রাণঘাতী করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। ঠিক তখনি এ উপজেলায় মার্চ মাসের ৩ তারিখ থেকে অন্তত ৮২ জন প্রবাসী এলাকায় প্রবেশ করেন। এসব প্রবাসীদের এলাকায় আসার তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে গত (১৯ মার্চ) বৃহস্পতিবার বিকেলে এক জরুরী সভা ডাকেন উপজেলা প্রশাসন। সভায় উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করে বিদেশ ফেরত লোকজনের খোঁজখবর নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে তালিকা অনুযায়ী উল্লেখিত ঠিকানায় গিয়ে অনেককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার কারও মোবাইলে ফোন করলেও তা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বিদেশ ফেরতরা এলাকায় আসার খবর থাকলেও তাদের খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে গা ঢাকা দিয়ে অন্য এলাকায় অবস্থান করছেন। ফলে তাদের ব্যাপারে এখনও কিছুই জানা যায়নি।
অভিযোগ রয়েছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এসব প্রবাসীদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা থাকলেও তা না মেনে অবাধে বাহিরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ গোপনে বিয়েও করতেছেন। ফলে স্থানীয় লোকজনের মাঝে করোনা সংক্রমণ হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে, করোনা ভাইরাসে স্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে কাজ করছেন আনসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। করোনা সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ করছেন তারা। এছাড়াও জনসাধারণকে রাস্তা ঘাটসহ যে কোনো জায়গায় সমাগম না করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ৫৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। এদের মধ্যে ৪৪ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বাকিগুলোকে আমরা পর্যবেক্ষন করছি। তবে অনেকের উল্লেখিত ঠিকানায় গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের বলেন, যারা এলাকায় এসে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাদেরও সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।