করোনা ভাইরাস দুর্যোগে কিশোরগঞ্জ জেলার জীবনচিত্র বদলে গেছে। প্রশাসনের আহ্বানে মানুষ এখন ঘরে ঘরে অবস্থান করছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে। সাধারণ মানুষও প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার চেষ্টা করছে। একেবারে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এ অবস্থায় কাজকর্ম না থাকায় একেবারে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন বিপাকে পড়েছে। তাদের অনেকে প্রতিদিনের খাবার সংগ্রহ করতে পারছে না।
এ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন ১৩টি উপজেলায় ১০ হাজার হতদরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। এর জন্য ১০ লাখ টাকা ও ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ উপলক্ষে শনিবার (২৮ মার্চ) সকালে জেলা সদরের মডেল মহিনন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি অফিসে হতদ্ররিদ্রদের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আবদুল্লাহ আল মাসউদ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আ: কাদির মিয়া, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা: মাসুমা আক্তার, পিপি অ্যাড. শাহ আজিজজুল হক, সদর উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন, পিআইও কাওসার আহমেদ, মহিনন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলী প্রমুখ।
এই তালিকাভুক্ত প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আলু ও দুই কেজি ডাল, মাস্ক, সতর্কতামূলক লিফলেট প্যাকেট করে দেওয়া হচ্ছে। এ খাদ্য সহায়তা সংশ্লিষ্টদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। তাছাড়া কারো যদি আর্থিক সমস্যা থেকে থাকে তাহলে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছে। সেই বিষয়গুলোও দেখা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদির মিয়া বলেন,করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলমান পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের কর্মজীবী/অতিদরিদ্র-দুস্থ পরিবার যেন খাদ্যাভাবে কষ্ট ভোগ করতে না হয় এবং সরকারের আদেশ মত যেন ঘরে থাকতে পারে সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আজ জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর নির্দেশনায় সদর উপজেলায় অতি দরিদ্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেন। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি চাল,২ কেজি ডাল, ৫ কেজি আলু, মাস্ক, সতর্কতামূলক লিফলেট প্যাকেট করে প্যাকেজ পদ্ধতিতে দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারনে কেউ খাদ্যাভাবে কষ্ট করতে হবেনা। সরকারের সব ধরনের প্রস্ততি রয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সদর উপজেলায় ৯০০ টি পরিবারসহ পুরো জেলায় ১০ হাজার পরিবারের নিকট খাবার সামগ্রী পৌছে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি যা আজ থেকে শুরু করা হলো। পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতি ও চাহিদা বিবেচনায় এসংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। আতংকিত না হয়ে সতর্কতার সাথে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আমাদেরকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
এদিকে কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, করোনার সর্বশেষ তথ্যমতে মোট কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ২৮৯ জন। এর মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে ২৮০ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কায়ারেন্টাইনে ৯ জন। কুয়ারেন্টাইন সম্পন্ন করেছেন ৬৭২ জন।