করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাঠে কাজ করছে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, ডিবি ও ট্রাফিক পুলিশ। তারা রংপুর নগরীসহ জেলা জুড়ে হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলাসহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে নিয়েছে নানামুখী পদক্ষেপ। জনসাধারণের জমায়েত বন্ধ করাসহ সড়কে বের হওয়া লোকদের ঘরে থাকতে উৎসাহিত করছে। নগরীর বিভিন্নস্থানে জীবানু নাশক স্পে করা হচ্ছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
সোমবার নগরীর শাপলা চত্বর, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, লালবাগ, মর্ডাণ মোড়, পার্কের মোড়, কাছারি বাজার, মাহিগঞ্জ, তামপাট, সাতমাথা, হারাগাছ, মেডিকেল মোড়, ধাপ, কামারপাড়া, টার্মিনাল, বুড়িরহাট, সিগারেট কোম্পানীসহ রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকাতে টহল দিয়েছে তারা। নগরীর মোড়ে মোড়ে চেক পোষ্ট বসিয়ে লোকজনকে ঘরে থাকতে বলছেন। প্রতিদিনের ন্যায় আজও ঘরে ছেড়ে সড়কে বের হওয়া লোকজনকে ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন পুলিশ, র্যাব, ডিবি ও ট্রাফিক পুলিশ এবং সেনাবাহিনী সদস্যরা।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসচেতনতা মুলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন, রংপুর সদর উপজেলা পরিষদ, জাতীয় যুব সংহতি, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন রংপুর শাখা, ছাত্র সমাজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, উই ফর দেম সংগঠন, বাংলার চোখ, ৩২ নং ওয়ার্ড সামাজিক উন্নয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়াও অসহায় দু:স্থদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মহানগর যুব সংহতির সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি, রংপুর সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন ছোট বাবুসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা কর্মহীন দিনমজুর ও শ্রমজীবিদের চাউল, ডাল, তেলসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন রংপুর শাখার সভাপতি কাজী জাহিদ হোসেন লুসিড ও সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম রিপন এর নেতৃত্বে ফটো সাংবাদিকরা বিনামূলে মাস্ক বিতরণ করেন।
অন্যদিকে প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের হওয়া লোকজনকে সতর্ককরণ, ঘরে থাকার গুরুত্ব এবং করোনা মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে অবগত করে মাস্ক ছাড়া বের হওয়া লোকজনকে মুখে মাস্ক পরিধানে উৎসাহিত করেন। অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে অটো রিকসার চালকদের সচেতন করেন। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মাইকিং করে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া সড়কে মোটর সাইকেল, সাইকেল বা অন্য যানবাহন নিয়ে বের হতে নিষেধ করা হয় আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী।
এবিষয়ে র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস বলেন, আমরা জনগণকে এই ভয়াবহ মহামারির সংক্রমণ থেকে নিরাপদে থাকতে উৎসাহিত করছি। মূলত সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে টহল ও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে হচ্ছে। এ সময় তিনি বলেন, আমাদেরকে দেখলে ঘরে ঢুকে যাওয়া, আর ফিরে গেলে বাহিরে চলে আসা, এই ধোঁকা র্যাব, পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনীকে নয়। যারা এটা করছেন তারা নিজের দেশ, পরিবার এবং নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছে। এতে নিজেরা যেমন ঝুঁকিতে পড়ছেন। পরিবারসহ অন্যান্যের ঝুঁকির দিকে ধাবিত করছেন।
রংপুর মেট্রোপলিন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) মহিদুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলা নগরীর বিভিন্ন স্থানে জীবানু নাশক স্পে করা হচ্ছে। পাশাপাশি সড়কে বের হওয়া লোকজনকে পুলিশ সদস্যরা সচেতন হবার আহব্বান জানান।
রংপুর মেট্রোপলিন পুলিশের এডিসি (ডিবি) উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, করোনা ভাইরাস রোধে ডিবির দুইটি টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মোটর সাইকেল বহর নিয়ে জনগণকে সচেতন করার লক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সর্তক হতে হবে,সবাইকে সচেতন করতে হবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। ঘরে থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, রংপুর সদরসহ জেলার আট উপজেলায় মনিটরিং করা হচ্ছে। তথ্য অফিসের মাধ্যমের জনগনকে সচেতন হতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এদিকে এসবের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃ্দ্িধ রোধে বাজার মনিটরিংসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কার্যক্রম চলছে।