চলমান অঘোষিত লকডাউনের কারণে নওগাঁর পতীতলায় কমে গেছে প্রান্তিক দিনমজুরদের আয়। আপদকালীন খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসাবে সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার ১ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে প্রতি পরিবারের জন্য চাল ১০ কেজি, আলু ২কেজি, ডাল ১/২ কেজি, তেল ১/২লিটার ও ১টি স্যাভলন সাবান (সূত্র: উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ফেইসবুক)। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে ভ্যান চালক, নরসুন্দর, মুচির মতো প্রান্তিক মানুষের মাঝে এ সকল খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। তবে উপকারভোগিদের তালিকা প্রণয়নের সময় কৃষি মজুরদের নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে হাতে কাজ না থাকা কয়েকজন কৃষি মজুর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এলাকায় উল্লেখযোগ্য শিল্পকারখানা না থাকায় প্রান্তিক মানুষরা কৃষি মজুর, ইটভাটা শ্রমিক, ভ্যান চালনা, দোকান কর্মচারী, ট্রাক্টর শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসা ইত্যাদির মাধ্যমে জীবণ ধারণ করে থাকেন। করোনার ভাইরাসের প্রার্র্দূভাব মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন অঘোষিত লক ডাউনের কারণে সীমিত আকারে ভ্যান চলাচল করলেও দিনমজুর যারা প্রতিনিয়ত শহরে কাজ করতে আসেন অন্যান্যের পাশাপাশি তাদের আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার উপজেলা প্রশাসন হতে বিভিন্ন ইউনিয়নে ১হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হলেও কৃষি মজুর ও দিন মজুরদের বিবেচনা করা হয়নি। এ সকল কৃষি মজুরের অধিকাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শালডাঙ্গা গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্য ললিন খয়া জানান, ইউনিয়নের মোট ৭০জনকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভ্যানচালক রয়েছে। এদের মধ্যে শালডাঙ্গা গ্রামের ভ্যানচালক পরেশ খয়া এখনও ভ্যান চালাচ্ছেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষি মজুরদের হাতে কাজ না থাকায় তাদেরও খাদ্য সহায়তা দেওয়ার দরকার বলে তিনি দাবী করেন। নজিপুর ইউনিয়নের দোচাই গ্রামের ভিক্ষুক অফির উদ্দিন জানান, করোনার কারণে মানুষজন ভিক্ষা দেয়না। দশ দিন ধরে ঘরে কোনো খাবার নেই। সরকারিভাবে চাল বিতরন করা হলেও আমাকে কেউ দেয়নি। অথচ মেম্বার তার নিজের বোন অমিতাকে চাল দিয়েছে। তার ছেলে দোচাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরীর চাকুরী করে। আমাদের কাছে কেউ আসেনি।
এ বিষয়ে মাটিন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম রুবেল জানান, তিনি ৭০ জনের জন্য বরাদ্দ পেয়েছেন যা এলাকার ভ্যান চালক, মুচি, নরসুন্দরদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তাঁর ইউনিয়নে ৪হাজার বরাদ্দ প্রদান করা হলে ভালো হতো বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু শোয়েব খান এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমি বাইরে আছি পরে কথা হবে বলে ফোন রেখে দেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।