করোনা ভাইরাসের সংকটময় পরিস্থিতিতে কর্মহীন শ্রমজীবি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গাইবান্ধার সাঘাটার পাশ^বর্তি চরবেষ্ঠিত ফুলছড়িতে নেওয়া হয়েছে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। ইউএনওর উদ্যোগে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ফুডব্যাংক। এই ফুডব্যাংকের মাধ্যমে শ্রমজীবি ও কর্মহীন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে মনে করছে এলাকাবাসী। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সচেতনমহল।
উপজেলা প্রশাসন সর্বস্তরের জনগনের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠনের কাজ করছে। এ গ্রুপের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান আছে। স্বেচ্ছাসেবক দলে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৬৩টি ওয়ার্ডের আগ্রহী যেকোন ব্যক্তি অংশগ্রহণ করতে পারছেন। যাদের মাধ্যমে সরকারী সহায়তার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের কারণের যেকোন সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় শ্রমজীবি ও কর্মহীন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একটি ফুডব্যাংক তৈরি করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সমাজের বিত্তবান বা দানশীল যেকেউ সহযোগিতা করতে পারবেন। সেটা হতে পারে চাল, আলু, ভোজ্য তেল, ডাল, লবন, পেয়াঁজ, শিশু খাদ্য ইত্যাদি। ফুড ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রহনকৃত খাদ্যশস্য একটি কেন্দ্রীয় ভান্ডার থেকে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী বন্টন করা হবে। উপজেলা প্রশাসনের এমন মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উদাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামের বাসিন্দা প্রধান শিক্ষক শামসুজ্জোহা বাবলু বলেন, এই ফুড ব্যাংকের কারণে প্রকৃত গরীব, অসহায় ও কর্মহীন মানুষেরা উপকৃত হবেন। গ্রহন ও বণ্ঠনে সু-সমনীতি বজায় থাকায় সম্পদশালী বা দানশীল যেকোন ব্যক্তি তাদের অনুদান নিশ্চিতে এই ফুড ব্যাংকে দিতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন। উড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহাতাব উদ্দিন বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে একদল স্বেচ্ছাসেবক থাকলে করোনা ভাইরাসের কারণে যেকোন সংকট সহজেই মোকাবেলা করা সম্ভব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান দোলন বলেন, এ উপজেলার মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ অকৃষি পেশায় নিয়োজিত। যাদের মধ্যে রিকশা-ভ্যানচালক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, নৌকা শ্রমিক ও দিনমজুর বেশী হওয়ায় এ সময়ে তারা বেকার হয়ে পড়েছেন। মূলত এ শ্রেনির মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের জন্য আমরা ফুডব্যাংক সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছি। যাতে করে সরকারী সহায়তার পাশাপাশি এলাকার জনদরদী এবং বিত্তবান মানুষজন সহায়তা করতে পারেন। এ পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগনের মধ্য থেকে ব্যাপক সারা পাচ্ছি। আশা করছি, এ উদ্যোগ প্রাকৃতিক দূর্যোগপ্রবণ ফুলছড়ির জনগণের টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ভবিষ্যতেও কাজ করবে।