পাবনার চাটমোহরে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যেও প্রতিদিনই রাস্তায় বের হচ্ছেন অনেকেই। চলছে সিএনজি,অটোভ্যান,বোরাকসহ নানা রকম যানবাহন। সাধারণ মানুষকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য প্রশাসন মাইকিং করা ছাড়াও পরিচালনা করছে ভ্রাম্যমান আদালত। সেনাবাহিনীর টহলও চলছে। পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে সকল দোকানপাট ও যানবাহন চলঅচল। কিন্তু রাস্তাঘাটে,হাট,বাজার,ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থানে লোক সমাগম হচ্ছে প্রতিদিন। ত্রাণ বা খাদ্যের আশায় মানুষ ভীড় করছেন বিভিন্ন স্থানে। নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশ জুড়ে লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি মানুষ খাদ্যের আশায় বেরিয়ে আসছে পথে। সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হলেও,তা চাহিদার তুলনায় অতি নগণ্য। ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ত্রাণের আশায় দল বেঁধে ঘুরছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ।
চাটমোহরের চায়ের দোকানী,নির্মাণ শ্রমিক,সাইকেল মেকার,সেলুন শ্রমিক থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পর্যন্ত ত্রাণের জন্য ধর্না দিচ্ছেন জনপ্রতিনিধি ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে। আশায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কাজের জন্য শ্রমিক,দিনমজুর বাইরে বের হয়ে এসেছে। কিন্তু অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জমার টাকাও উঠছে না। এই মানুষগুলো খাদ্য সহায়তা পাওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে বসে আছে। কেউ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এলেই মানুষ ঘিরে ধরছে তাদের। এক্ষেত্রে সামাজিক দুরত্বের কোন বালাই নেই। কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক দুরত্ব। চাটমোহরের বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় অসংখ্য মানুষের ভীড়। বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংক চাটমোহর শাখায় গিয়ে দেখা গেলে নিচের সিঁড়ি থেকে দোতলায় ব্যাংকের ভেতর পর্যন্ত প্রচন্ড ভীড়। রাস্তা-ঘাটে অবাধে চলছে সিএনজি,অটোরিক্সা আর অটোভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহন। বাজারের দোকান কিংবা কাঁচা বাজারে সামাজিক দুরত্ব মানা হচ্ছে না।
এদিকে কর্মহীন মানুষের মধ্যে খাদ্যের জন্য হাহাকার বাড়ছে। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের চাইতে এই হাহাকার মানুষকে দিশেহারা করে তুলছে। চাটমোহরে এখ নপর্যন্ত দরিদ্র মানুষের জন্য মাত্র ২০ মেট্রিক টন চাল আর ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’ লকডাউন করা উপজেলার কাটাখালী গ্রামেই ৬০ হাজার টাকা ও ২ মে.টন চাল বিতরণ করা হয়। ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় যৎসামান্য ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান জানান,সরকারি বরাদ্দ থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন সংগঠণ এগিয়ে এসেছেন। তারাও খাদ্য ও অর্থসহায়তা দিচ্ছেন।