করেনা ভাইরাসের বিস্তৃতি ঠেকাতে সরকারিভাবে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ও হরিনগরসহ আশপাশের এলাকায় তা মানা হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মৌ-খামারী সুন্দরবন সংলগ্ন এসব এলাকায় জড়ো হওয়ার পাশাপাশি ইচ্চামত তারা বাজারে আসা-যাওয়া করছে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ কর্মশুন্য হয়ে পড়ার পরও উপকুলীয় জনপদের হাজারও পরিবার সরকারি নির্দেশনা মেনে প্রায় দুই সপ্তাহ নিজ নিজ বাড়ি ঘরে অবস্থান করছে। পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে তারা নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া অদ্যাবধি বাজার ঘাটে যাওয়া থেকেও বিরত রয়েছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতাধিক মৌসুমী চাষী প্রতিদিন ভোরে ট্রাক ভর্তি বক্স ও মধু সংগ্রহের সরঞ্জামাদী নিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় হাজির হচ্ছে। এসব বহিরাগতের যত্রতত্র চলাচলের পাশাপাশি হরিনগর, মুন্সিগঞ্জ ও সুন্দরবন বাজারের সেলুন, হোটেল রেষ্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সুযোগে সমগ্র এলাকায় ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
চুনকুড়ি গ্রামের জহুর আলী ও সিংহড়তলীর আবদুস সালামসহ অনেকে জানান, প্রায় প্রতিদিন ভোর রাতে দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে ট্রাকযোগে অসংখ্য মৌ চাষী এলাকায় প্রবেশ করছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের এ দুর্যোগময় মুহুর্তে মানুষের স্থানান্তরের বিষয়ে স্পষ্ট বিধি নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বহিরাগত ব্যবসায়ীরা যেসব নির্দেশনা মানছে না। কদমতলা গ্রামের সফিকুল ইসলাম, মথুরাপুরের আশুতোষ মন্ডল ও মীরগাং এর করুনাময়ী মন্ডলের অভিযোগ, মৌ খামারীরা সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় এসে যত্রতত্র চলাচল করছে। প্রশাসনের দৃষ্টি এড়াতে বাইরে থেকে দরজা আটকে হরিনগর ও মুন্সিগঞ্জ বাজারের চায়ের দোকানসমুহের ভিতরে তারা সময় কাটাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত বাইরে থেকে আসতে থাকা মৌ চাষী এবং তাদের কর্মীদের অবাধ চলাচলসহ বাজার ঘাটে অবস্থানের কারণে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌ চাষীদের আগমনের পাশাপাশি স্থানীয়রা সকালে প্রায় সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় সামাজিক দুরত্ব রক্ষার নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
ভয়ংকর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলার পুর্ব সতর্কতার জন্য স্থানীয় বাজারে সকলের চলাচল সীমিত করার পাশাপাশি প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপও কামনা করেছে সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কাশেম বলেন র্যাব পুলিশসহ প্রশসানের সহযোগীতায় নিয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য সকলকে সচেতন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
শ্যামনগর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ নাজমুল হুদা বলেন, সামাজিক জনসমাগম ঠেকাতে পুলিশ নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নির্দেশনা লংঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।