বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের আক্রমণে যেখানে মৃত্যুপুরীতে রুপান্তরিত হয়েছে সেখানে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পাবনা বেড়া উপজেলার জনপ্রিয় ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী ফোন পেলেই ত্রাণ নিয়ে খাদ্য সংকটে পড়া পরিবারের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন তিনি ।
ইতিমধ্যে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষ যারা খাদ্য সংকটে পরেছেন তাদের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও মাঠে কাজ করছে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মোঃ রওশন আলম, বেড়া উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ শহীদুল্লাহ প্রমুখ।
জানা যায় শুক্রবার (৩ এপ্রিল) ইউএনও উপজেলা প্রশাসন বেড়া পাবনা ফেসবুক আইডিতে, যে পোষ্টটি দেয়া হয় তা হুবহু তুলে ধরা হলো, “করোনা ভাইরাসের কারণে বেড়া উপজেলার যে সকল পরিবার খাদ্য সংকটে পড়েছেন তারা (০১৭৩৭-৩৬১৪৪৪) নাম্বারে যোগাযোগ করুন। উপজেলা প্রশাসন তাদের বাসায় খাবার পোঁছে দেবে।” এমন পোষ্ট দেখে নি¤œ আয়ের, মধ্যবিক্ত পরিবারের অনেকেই ফোন দিচ্ছেন আর ফোন পেতেই তাদের সবার বাড়িতে খাবার নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ইউএনও। এসকল পরিবারদের চাল, ডাল,আলু পেঁয়াজ, রসুন, তেল,লবণ,সাবান দেয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে উপজেলা প্রশাসনে ফোন করে খাবার পাওয়া কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা ভাবতেও পারিনি ফোন করলে বাড়িতে এসে খাবার দিয়ে যাবে ইউএনও স্যার। খাবার পেয়ে আমরা অনেক খুশি। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে খাদ্য সংকটে পড়া মানুষের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌছে দিচ্ছেন।
জানা যায় উপজেলা পর্যায়ে করোনা সংক্রামণ রোধে ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে ঔষধের দোকান, মুদি দোকানের সামনে তিন ফিট অন্তর অন্তর গোল বৃত্ত এঁকে দেওয়া সহ উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ভিত্তিক কমিটি গঠন করেছেন।
এছাড়াও গ্রাম্য পুলিশ, ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
এই আতঙ্কের মধ্যে জীবনের ঝুকি নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে জনসমাগম এড়াতে দিন রাত হাট বাজার ঘুরে বেড়াচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
হাট বাজারে ঘুরে করোনা ভাইরাস সম্পকে জনসাধারনকে সচেতন করতে লিফলেট বিতারণনের পাশাপাশি ঘরের বাইরে আসা লোকজনকে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করছেন এবং সরকারি নিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানা করে ঘরে থাকতে বাধ্য করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ও মাইকিং করে চা’র দোকানসহ বিভিন্ন জনসমায়েতকৃত চা এর দোকান বন্ধ ঘোষনা করেছেন। তিনি বিদেশ ফেরতদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন সঠিক ভাবে নিশ্চিত করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও বিভিন্ন স্থানে পানি ও হ্যান্ড ওয়াসের ব্যবস্থা করেছেন।
উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ শহীদুল্লাহ জানান, উপজেলার চায়ের দোকানদার, ভ্যান চালক, দিন মুজুর,ঘাট শ্রমিকসহ খাদ্য সংকটে পড়া প্রতিটি পরিবারের মাঝে তালিকা করে প্রতিদিনই ত্রাণ দেয়া হচ্ছে।
ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী জানান, উপজেলাতে এমনও কিছু পরিবার রয়েছে যারা কখনোই সরকারি কোন সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী ছিল না। তারা করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পরেছে তারা চক্ষু লজ্জায় না পারছে চেয়ারম্যানদের কাছে যেতে না পারছে উপজেলা প্রশাসনের কাছে কিছু সাহায্য চাইতে। তারা যদি তাদেরকে না দেখিয়ে আমাদের কাছে সাহায্য চায় তাহলে তাদের তথ্য গোপন রেখে বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌছে দিচ্ছি আমরা। এ কার্যক্রমে আমার সাথে মাঠ পর্যায়ে সেচ্ছাসেবক হিসেবে বেশ কয়েকজন কাজ করছেন। আজ শনিবার ফোনে চাওয়া কয়েকটি পরিবারকে ত্রাণ পৌছে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।