আদম ব্যাপারী বুলবুল আহম্মেদের কাছে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে ফেঁসে গেল ৪ যুবক। মানবপাচারকারী বুলবুলের কাছে টাকা চাইতে গেলে উল্টো মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয় ওই যুবকদের। এ ঘটনাটি ঘটেছে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায়। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলার গোটিয়া গ্রামের মৃত ওসমান আলীর পুত্র বুলবুল আহম্মেদ পার্শ্ববর্তী গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট সরদারপাড়া গ্রামের মন্টু সরদারের ছেলে ফারুককে সিঙ্গাপুরে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর ৩০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তিতে হাতিয়ে নেন ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ঠিক একই কৌশলে প্রতারক বুলবুল পঞ্চগড়ের যতনপুকুরি এলাকার জহির উদ্দীনের ছেলে সাইফুলের কাছ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে ১৩ লাখ টাকা। দীর্ঘদিন ঘুড়াঘুড়ির পর বিদেশে পাঠাতে না পারায় ভুক্তভোগী ফারুক এবং সাইফুল সিংড়ার পাঙ্গাশিয়া গ্রামের সবুজকে (তাদের পূর্ব পরিচিত) এ বিষয়ে অভিযোগ জানায়। সবুজ পাওনাদারদের পক্ষ থেকে বুলবুলের কাছে টাকা চাইতে গেলে ঘটে বিপত্তি। বুলবুল মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি প্রদর্শন করে সবুজকে এবং সিংড়া ও নাটোর সদর থানায় চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে সবুজ, জলিলসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে।
প্রতারক বুলবুল সিংড়ার গুটিয়া গ্রামের মৃত রহমতের পুত্র ডিস ব্যবসায়ী প্রভাবশালী রফিকের ঘনিষ্টজন হওয়ায় থানা পুলিশকে ম্যানেজ করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। অভিযোগের সূত্র ধরে অতি তৎপর হয়ে ওঠে থানা পুলিশ।
গত ২০ মার্চ নাছিয়ারকান্দি গ্রামের আফসার আলীর পুত্র আবদুল জলিলকে রাত ৮টায় আটক করে সিংড়া থানা পুলিশ। সারারাত আটকে রেখে পরদিন বিকেল সাড়ে চারটায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় গ্রেফতারকারীকে। আমি সাংবাদিক পরিচয়ে সিংড়া থানার ওসিকে (০১৭১৩৩৭৩৮৫৮) ফোন দিয়ে আটকের কারণ জানতে চাইলে উনি জিজ্ঞাসাবাদের পরে বলতে পারবেন বলে জানান।
জিজ্ঞাসাবাদে কোন কিছু না পেয়ে সেইদিনই হস্তান্তর করা হয় নাটোর সদর থানায়। অনেক নাটকীয়তার পর প্রতারক বুলবুল সদর থানা পুলিশকে প্রভাবিত করে গভীর রাত্রিতে মা হামিদা বেগমকে দিয়ে ২১ মার্চ মিথ্যা ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ১০১। আসামি করা হয়েছে জলিল, সবুজ, ফারুক, সাইফুলসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনকে।
মামলার কারণ সম্পর্কে নাটোর জেলার পুলিশ সুপার লিটন কুমার দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছি।
ঘটনা সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ই ডিসেম্বর বুলবুল আহমেদ নাটোর অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সবুজকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ২ মার্চ। অভিযোগটি আদালতে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়। ভুক্তভোগী আসামীগণ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ প্রতারক বুলবুলের যথাযথ শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন।