করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনায় শুরু থেকেই ব্যাপক তৎপরতা চলছে রংপুরে। এতে সচতেনতা বেড়েছে। বেশির ভাগ মানুষ ঘরমুখি হয়েছেন। কেউবা রয়েছেন সঙ্গরোধে। প্রতিদিন পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও জনসমাগম রোধে কাজ করছেন।
এতো কিছুর পর অসচেতন মানুষজন বরাবরই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে কারণে অকারণে বাহিরে বের হচ্ছেন। সড়কে বাড়ছে যানবাহন। হাট-বাজারেও কেউ মানছেন না নিরাপদ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ববিধি। এতে করে দিন দিন রংপুরে বাড়ছে করোনা ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে মহানগরীতে কড়া আইন জারি করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত ওষুধের দোকান ব্যতিত নিত্য প্রয়োজনীয়সব ধরনের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে এই আইনে। একই সাথে মেট্রেপলিটন পুলিশের আওতাধীন এলাকাতে সব ধরনের ব্যক্তি ও যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
জরুরি সেবা, চিকিৎসা, ভোগ্য ও রফতানি পণ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞার বাহিরে থাকবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই আইন জারি থাকবে। পুলিশের নতুন
এই নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থার হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে নানা ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবয়ন করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ এখনও পুরোপুরি সচেতন নন। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেলে জনগণ সতর্ক হয়। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন চলে গেলেই আবার জনসমাগম বাড়ছে। বাহিরে আসা মানুষজন আইন মানছেন না। তাই বাধ্য হয়েই এই কড়াকড়ি নির্দেশনা করা হয়েছে। কেউ এ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কমিশনার আবদুল আলীম বলেন, মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করতে এবং ঘরে রাখতে সব ধরণের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। ইতোমধ্যে অহেতুক যানবাহন নিয়ে ঘোরাফেরা বন্ধ ও অপরাধ প্রবণতা রোধে নগরীর বেশ কিছু স্থানে পুলিশি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে রংপুর নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সকল প্রবেশ পথ বন্ধ করা দেয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি।
এদিকে সকাল থেকে নগরজুড়ে মাইকিং শুরু করা হয়েছে। নিরাপদ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মাঠে কঠোর তৎপরতা চালাচ্ছেন র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অহেতুক বাহিরে বের হওয়া লোকজনকে জেরা করা হচ্ছে। মোটরসাইকেলের কাজগপত্রহীন চালককে জরিমানা করার পাশাপাশি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
এব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) ফরহাদ ইমরুল কায়েস জানান, করোনা ঝুঁকি এড়াতে সরকারি সব নির্দেশনা মেনে জনগণকে ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সড়কে বের হওয়া যানবাহনে অধিক যাত্রীর উঠানামা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। একই সাথে মোটরসাইকেলে শুধু মাত্র চালক, অটোরিকশাতে দুইজন যাত্রী এবং সাধারণ রিকশাতে এক জনের বেশি যাত্রী বহন করতে দেয়া হচ্ছে না। আইন অমান্যকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে।
এদিকে গত রোববার (৫ এপ্রিল) রংপুর জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে জনসমাগম রোধে বিকেল ৫টার পর জেলার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ওষুধের দোকানসহ কৃষিপণ্য পরিবহন ও বিপণনজনিত ক্রয়-বিক্রয় এ বিধি নিষেধের আওতামুক্ত রাখার কথা বলা হয় নির্দেশনায়।