করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে আতঙ্ক আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পরেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও করোনা থেকে জনগনকে রক্ষা করতে এবং কর্মহীন দুঃস্থ পরিবারের দ্বারে দ্বারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে নিজেদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে জেনেও দিন-রাত সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন বরিশালের কয়েকজন জনপ্রতিনিধিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের রক্ষা করতে একপ্রকার হোম কোয়ারেন্টিনে থাকলেও, শুরু থেকে অদ্যবর্ধি মাঠপর্যায়ে থেকে সরকারের নির্দেশ পালনে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন কয়েকজন জনপ্রতিনিধিরা। এরমধ্যে রয়েছেন, জেলার গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু, নলচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা, মুলাদীর সফিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু মুসা হিমু মুন্সী ও কাঠালিয়ার শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মাহমুদ হোসেন রিপন।
এসব জনপ্রতিনিধিরা প্রথমে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এলাকার বিভিন্ন জনপদে জনেসচেতনতা মূলক প্রচারনা চালিয়েছেন। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সর্বাক্ষনিক করোনা থেকে রক্ষা পেতে কী কী করোনিয় আছে তা উল্লেখ করে পোষ্ট করেন। এ ছাড়া ফেসবুকে সরকারি আইন ভঙ্গ করে জনগনকে একাত্রিত না হতে, ঘণ ঘণ সাবান, হ্যান্ড ওয়াস, হ্যাক্সিসল, দিয়ে হাত ধোয়ার অনুরোধ করেন। এজন্য তারা নিজ নিজ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নিজস্ব অর্থায়নে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও করেছেন। জনগনের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক, সাবান, হ্যান্ডওয়াস, হ্যাক্সিসল বিতরণ করেছেন। পুরো এলাকায় এসব জনপ্রতিনিধিরা একদিন পর পর জীবাণুনাশ স্প্রে করার ব্যবস্থা করেছেন।
পরবর্তীতে উল্লিখিত জনপ্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বাস্তবায়ন করতে করোনার কারণে ঘরমুখী কর্মহীন মানুষের মাঝে সরকারের বরাদ্দকৃত ও নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী নিজ হাতে বহন করে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন। বিশেষ করে কেউ যেন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হয় সেজন্য তারা (ইউপি চেয়ারম্যান) নিজ নিজ উদ্যোগে গোটা ইউনিয়ন লকডাউনের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে পাহাড়া বসিয়েছেন। আঞ্চলিক সড়কগুলোতে এ্যাম্বুলেন্স, প্রশাসন, গণমাধ্যাম ও নিত্যপন্যের যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা রেখে সড়কগুলো ব্যারিকেট দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন বলেন, সাধারণ মানুষকে ঘরে ফিরাতে এবং দোকানপাঠ বন্ধ রাখতে সর্বদা কাজ করছি। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের ইউনিয়ন লক ডাউন করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, করোনার সংক্রমনরোধে সাধারণ মানুষদের ঘরে রাখতে প্রয়োজনে আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হবে। কারও যদি কিছুর প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে ফোন দিলে আমরা বাড়ি বাড়ি প্রয়োজনীয় নিত্যপন্য পৌঁছে দিচ্ছি।
মাহমুদ হোসেন রিপনের ফেসবুক থেকে গণসচেতনতা মূলক একটি পোস্ট হুবাহু তুলে ধরা হলো, “প্রিয় ইউনিয়নবাসী আস্সালামু আলাইকুম, আপনাদের সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে পৃথিবী আজ স্তম্ভিত, দুঃখের বিষয় পৃথিবীর কোথাও এই ভাইরাসের প্রতিষেধক এখনো তৈরি হয়নি, তবে আপনি সচেতন হলেই এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন। যেমন-ঘণ ঘণ হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা, সংক্রমিত হলে পরিবারের সদস্যসহ অন্য কারো কাছাকাছি না থাকা ইত্যাদি। আপনারা প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে যাবেন না, কোথাও কেউ একাত্রিত হলে আমাকে খবর দিবেন। কারো মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে সাথে সাথে আমার মোবাইল (০১৭৪৯-২৮০০০৩) নম্বরে ফোন করে জানাবেন, অথবা থানায় খবর দিবেন। আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনা করছি সকল বালামুসিবত থেকে আল্লাহতায়ালা আপনাকে ও আমাদেরকে রক্ষা করুক।