চরম করোনা আতংক ও স্বউদ্যোগে গ্রাম,পাড়া-মহল্লায় লকডাউনের মধ্যেও পাবনার চাটমোহর উপজেলার হাট-বাজার ও রাস্তায় মানুষের ঢল থামছে না। প্রশাসনের নজরদারী,সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল সত্বেও সামাজিক দুরত্বের বালাই নেই। বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মানুষের ভীড়। ভীড় করা হচ্ছে ত্রাণ নিতে এসেও। বৃহস্পতিবার সকালে চাটমোহর পুরাতন বাজারে গিয়ে দেখা গেল মুরগী বাজার,মাছ বাজার ও কাঁচাবাজারে অসংখ্য মানুষের ভীড়। বুধবার চাটমোহর পৌরসভার নতুন বাজারের সাপ্তাহিক হাটে ভোর থেকেই জমায়েত হতে থাকে অসংখ্য হাটুরে। সকাল ৮টার মধ্যে হাজার হাজার মানুষের ভীড় জমে। করোনা আতংক বা সচেতনতাবোধ তাদের মধ্যে আছে বলে মনে হয়নি। সরকারি নির্দেশনা মানতে এদের মধ্যে চরম অনিহা। প্রশাসন,সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ সবাইকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে ও ঘরে থাকতে জনসাধারণকে বারবার অনুরোধ জানাচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে প্রতিদিনই জরিমানা করা হচ্ছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইকতেখারুল ইসলাম দিন রাত চষে বেড়াচ্ছেন গোটা উপজেলা। চেষ্টা করছেন জনসাধারণকে সচেতন করতে। নিরলসভাবে পরিশ্রম করছেন এই সংকট মোকাবেলায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে। জরিমানাও করছেন আইন অমান্যকারীদের। তারপরও মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন।
সকাল ১১টার পর সমস্ত কাঁচা বাজার,মাছ,মাংসের বাজার বন্ধ ঘোষনা করেছে প্রশাসন। সাপ্তাহিক হাট আগেই বন্ধ করেছে। বিকেল ৫টার পর ওষুধের দোকান ব্যতীত সকল দোকানপাট বন্ধ থাকছে। কিন্তু কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। মানছেনা কেউ সরকারি নির্দেশনা। হাটে সমবেত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। এদিকে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া খোলা বাজারে চাল কিনতে নারী-পুরুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার চাটমোহর সরকারি কলেজ গেটে গিয়ে দেখা যায়,চালের জন্য দীর্ঘ লাইনে এক জনের সাথে আরেকজন লাগালাগি হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া অবাধে অটোভ্যান আর বোরাকে ৩/৪ জন করে যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে। মোটর সাইকেলে ৩ জন উঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কোন প্রকার সামাজিক দুরত্বই মানা হচ্ছে না। চায়ের দোকান,সেলুনে অবাধে বেচাকেনা ও চুল-দাড়ি কাটা হচ্ছে সামনের দরজা বন্ধ রেখে। দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। প্রতিদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। অথচ লোকজন কিছুই মানছেন না। ফলে আতংকের মধ্যে রয়েছেন অনেকেই।
এদিকে উপজেলার সমাজ,নিমাইচড়া,নবীন,চরনবীন গ্রামের মানুষ নিজেরাই নিজেদের বাড়ি লকডাউন করেছেন। কারণ এসকল গ্রামে ৭০ জনের অধিক শ্রমিক চাঁদপুর ও মাদারীপুর থেকে ফিরেছেন। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বের হচ্ছেন না। উপজেলার ছাইকোলা এলাকায় গুমানী নদীর উপর তৈরি বাঁশের সাঁকো তুলে দেওয়া হয়েছে। যাতে কেউ গ্রামে ঢুকতে না পারে। এরআগে উপজেলার কাটাখালী গ্রামকে লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন।