আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ২শ’৩০ জন মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা করোনা প্রতিরোধে কাজ করলেও তাদের নিজেদের কোন নিরাপত্তা নেই । পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট - পিপিই ছাড়াই তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ এবং মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে। ফলে তাদেরসহ তাদের পরিবারের জীবন হয়ে উঠছে ঝূঁকিপূর্ণ।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য বিভাগের ৩২ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ইউনিয়ন পরিদর্শক ৭ জন এবং কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার রয়েছে ২৯ জন। এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন পরিবার কল্যান পরিদর্শকা ১০ জন, পরিবার কল্যান সহকারী পরিদর্শিকা ৫১ জন, পেইড ভলান্টিয়ার ৯৬ জন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ৪ জনসহ দুই বিভাগে ২শ ৩০ জন কর্মী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। তারা মানুষকে সচেতনতাসহ জ্বর সর্দিকাশীর তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং সাধারন রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। অথচ এই মুহুর্তে তাদের নিজেদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট –পিপিই ছাড়াই এসকল কর্মীরা প্রতিদিন মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। আবার কাজ শেষে সন্ধ্যা হলে তারা ফিরে যাচ্ছে নিজের বাসায়। পাশাপাশি কমিউনিটি হেলথ প্রেভাইডাররা প্রতিনিয়ত কমিউিনিটি ক্লিনিকে বসে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এভাবে কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে তাদের নিজেদের জীবন ও পরিবার । গত ৯ এপ্রিল আমতলী উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১ জন রাজনৈতিক নেতার মৃত্যুর পর আমতলীর প্রতিটি জনপদ এখন করোনা জোন হয়ে উঠেছে। কারন তার মৃত্যুর আগে এবং তার মৃত্যুর পরে অনেকে তার সংস্পর্সে এসেছে। তারা এখন অনেক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফলো করোনা রোগের বিস্তার রোধে চলছে লকডাউন। এই লক ডাউনের মধ্যেও পায়ে হেটে কিংবা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা কাজ করছে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে। স্বাস্থ্য সহকারী মোর্শেদা বেগম জানান, জীবনের ঝুঁকি এবং আতঙ্ক নিয়ে মাঠে কাজ করছি। আমাদের প্রত্যেককে নিরাপত্তা সামগ্রী দেয়া হলে আমাদের জীবন কিছুটা ঝুঁকি মুক্ত হবো ।
আমতলী উপজেলা কমিউনিটি ক্লিনিক এসোসিয়েশনের সভাপতি ও চলাভাঙ্গা কমিউিনিটি ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইডার মো. আল হাসিব জানান, আমরা জীবন বাজি রেখে প্রতিটি কর্মী প্রতিদিন ক্লিনিকে কাজ করছি। আমাদের সাথে বাসার সকল সদস্যরাও ঝুঁকির মধ্যে পপড়ছ।
আমতলী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরদের আমারা কোন পিপিই দিতে পারিনি। সরকারী ভাবে তাদের পিপিই সরবরাহ করা হলে তাদের জীবনের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী জানান, আমতলী হাসপাতালে যে পরিমান পিপিই পাওয়া গেছে তা কেবল হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসদের জন্য রাখা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের পিপিই হলে তাদের জীবনের ঝুঁকি অনেকটা কমে আসবে।
বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ূন শাহীন খান জানান, উর্ধতন কর্র্তৃপক্ষের কাছে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের জন্য পিপিই চাওয়া হয়েছে। সরবরাহ পাওয়া গেলে মাঠ পর্যায়ের প্রত্যেক কর্মীকে পিপিইসহ সকল সরঞ্জাম সরবরাহ করবো।