দেশব্যাপি সরকারী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী শুরু হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় নি¤œ আয়ের দরিদ্র মানুষ নির্ধারিত প্রতি কেজি চাল ১০ টাকার বিনিময়ে কিনছেন। এ চাল বিক্রিতে কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী বাজারের ডিলার বিল্লাল মোল্যার বিরুদ্ধে ক্রেতাদের ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনশত টাকার বিনিময়ে ৩০কেজি চাল দেবার কথা থাকলেও ক্রেতাদের চাল দেয়া হচ্ছে ২৭/২৮ কেজি। এ নিয়ে ক্রেতাদের ক্ষোভ থাকলেও খাদ্য সহায়তা বন্ধ হবার আশংকায় কথা বলছেন না অনেকে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী বাজারের ডিলার বিল্লাল মোল্যা তার দোকানে এলাকার গরীব মানুষের মধ্যে প্রতিকেজি ১০ টাকা মূল্যে চাল বিক্রি করছিলেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে ওএমএসএর চাল ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ ওঠে। উপস্থিত কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনশত টাকায় জনপ্রতি ৩০কেজি চাল বিক্রির নিয়ম থাকলেও তিনি ক্রেতাদের ওজনে কম দিয়ে মাত্র ২৭কেজি করে চাল দিচ্ছেন। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে তিনি ২৮কেজি করে চাল দেয়া শুরু করেন। এ সময় সাংবাদিকরা চাল কম দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে ক্যামেরার সামনে দেয়া হয় ত্রিশ কেজি।
চাঁচুড়ী গ্রামের শিউলী বেগম জানান, ‘এখানে ৩শ’ টাকা দিয়ে ২৮কেজি চাল পেয়েছি।’ একই গ্রামের ফরিদা বেগম বলেন, ‘ওএমএসএর দোকানে কার্ড নিয়ে চাল নিতে এসেছি। ৩শ’ টাকায় ত্রিশ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও ২৮কেজি চাল দিয়েছে। এ কথা কাকে বলবো?’
সরকারী ভূর্তকির চাল ওজনে কম দেয়ার বিষয়ে চাঁচুড়ী বাজারের ডিলার বিল্লাল মোল্যা জানান, ‘সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে চাল আনার সময় ওনাদের ওজন যন্ত্র নষ্ট ছিলো। পরে স্থানীয়ভাবে ওজন দিয়ে দেখি বস্তায় চাল কম আছে, সে কারণে চাল কম দেয়া হচ্ছে। এটা কালিয়ার ইউএনও জানেন।’
এ প্রসঙ্গে চাঁচুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হিরক বলেন, ‘সংশ্লিষ্টরা বস্তায় ওজনে কম দেয়ার কথা আমি শুনেছি। মেপে দেখলাম সাড়ে আঠাশ কেজি, এ ব্যাপারে ইউএনওর সঙ্গে আলাপ করবো।’
এ বিষয়ে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুল হুদার বক্তব্য গ্রহণের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মনির হাসান বলেন, ‘খাদ্য গুদামে চাল ওজনে কম দেয়ার কোন সুযোগ নেই। ডিলাররা চাল সঠিক ওজনে পেয়েছেন, এটা লিখিত নেয়া হয়। তারা ওজনে কম পেলে আবার মেপে সেটা পুরণ করে দেয়া হয়। ২/৩কেজি করে চাল কম দেয়া ডিলারদের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই না’।
জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৩টি পৌরসভা ও ৩৯টি ইউনিয়নে মোট ৩৭ হাজার ৩০৪ জন ১০ টাকা দরে চাল ক্রয় করতে পারবেন। তিনটি পৌরসভায় ১৪জনসহ জেলায় মোট ৯৪জন ডিলার কার্ডের বিনিময়ে এই চাল বিতরণ করছেন। এর মধ্যে পৌর এলাকায় কার্ডপ্রতি ৫কেজি করে সপ্তাহে ৩ দিন এবং গ্রাম পর্যায়ে জনপ্রতি ৩০কেজি করে মাসে একবার এ চাল ক্রয় করতে পারবেন।