চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দুইটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় করোনার প্রভাবে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি নির্দেশনা মানতে গিয়ে কর্মহীন হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। উপজেলায় চাহিদার তুলনায় সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণের পরিমান অপ্রতুল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে চন্দনাইশ উপজেলায় গত ২৬ মার্চ থেকে তিন দফায় ২৩.৫ মেঃ টন ত্রাণ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের প্রায়্ আড়াই লক্ষাধিক জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশী লোক দেশব্যাপী অঘোষিত লকডাউনের কারণে কর্মহীন অবস্থায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। এ দুর্যোগ মুহুর্ত্বে সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে জনপ্রতিনিধিদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। উপজেলার কাঞ্চনাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান,সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আহমদুর রহমান ভেট্রা জানান,গত তিন সপ্তাহের মধ্যে তিনবার কোন সময় ৭শত কেজি বা কোন সময় ৬শ কেজি করে ত্রাণের চাউল পেয়েছেন। যা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের জন্য অপ্রতুল। বিধায় ত্রাণ বিতরণে প্রতিনিয়ত মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে জনপ্রতিনিধিদেরকে। দোহাজারী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শামীম মৃধা জানান, প্রায় ২৯ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত দোহাজারী পৌরসভায় মাত্র ১৭০টি পরিবারের জন্য ১৭শ’ কেজি চাল পেয়েছেন। অথচ সদ্য প্রণীত তালিকা অনুযায়ী এলাকায় ভিক্ষুক, ভবঘুরে, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যানগাড়ী চালক, পরিবহন ও রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা এবং কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা হচ্ছে ১১শ’পরিবার। এর বাইরে রয়েছে’ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার। যারা কোনরূপ সরকারী কিংবা বেসরকারী সহায়তা না পেয়ে দীর্ঘসময়ের গৃহবন্দিতে অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে দিনযাপন করছেন। ফলে অনেকে পরিবার-পরিজনের জীবন রক্ষার্থে জীবন বাজি রেখে রাস্তায় বের হয়ে পুলিশের নির্মম লাঠিপেটার শিকার হচ্ছেন। এদিকে চট্টগ্রাম-১৪ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী এলাকায় দুস্থ ও অসহায় আড়াই হাজার পরিবারকে নগদ অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটি এলডিপির সভাপতি কর্নেল অব: অলি আহমদের পক্ষ হতে সংসদীয় এলাকায় প্রায় ৭ হাজার পরিবারের মাঝে ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তবে এসব ত্রাণ সামগ্রী দলীয় ভাবে বিতরণের কারণে বঞ্চিত সাধারন মানুষ। দুর্যোগ মোকাবিলায় পুলিশ প্রশাসন ও বসে নেই। এলাকার জন নিরাপত্তার পাশাপাশি করেছেন ত্রাণ বিতরণ। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার একেএম রশিদুল হকের পক্ষ থেকে আনোয়ারা সার্কেল (এ এসপি)মফিজুর রহমান চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ গুচ্ছ গ্রাম এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন চন্দনাইশ পৌর মেয়র মাহাববুল আলম খোকা ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রায় ৭শত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী দেন।। দু:স্থ ও অসহায় শ্রমিক নুরুল আবছার ,আনোয়ার ও এজহার মিয়া জানান এ যাবৎ যা ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছেন তাতে ৫/৬জন সদস্যের এক পরিবারের ৪/৫দিনের চলা মাত্র। তাই গৃহবন্দি অবস্থায় বাকি সময় কিভাবে কাটাবেন এনিয়ে দু:চিন্তায় পরেছেন এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ।এ ব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইত্তেফাককে জানান, জেলা থেকে যে পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে তাই বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন।