ত্রাণের চাল চুরির অপরাধে নড়াইলের নড়াগাতি থানার জয়নগর ইউনিয়নের দুই মেম্বারকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং এক ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুদা এ আদেশ দেন।
এরা হলেন-জয়নগর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মেম্বার রনি বেগম (৩৪) ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শেখ মোশাররফ হোসেন (৫২) এবং নড়াগাতি বাজারের ব্যবসায়ী সুভাষ সাহা (৩৫)।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংকটময় মুহূর্তে ইউপি মেম্বার মোশাররফ ও রনি বেগম ভিজিডির ত্রাণের সাত বস্তা চাল হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ না করে ব্যবসায়ী সুভাষ সাহার দোকানে রেখে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করছিল। এ খবর পেয়ে নড়াগাতি থানা পুলিশ তাদের আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের কারাদন্ডাদেশ ও জরিমানা করেন।
নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুন জানান, সুভাষ সাহার দোকানের পাশ থেকে সরকারি ভিজিডির ৩০ কেজি ওজনের পাঁচ বস্তা চালসহ আরো দুই বস্তা খোলা উদ্ধার করা হয়।
কালিয়া ইউএনও নাজমুল হুদা বলেন, ত্রাণের চাল নিয়ে কোন অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, নড়াইল সদর উপজেলার নাকসী বাজারে টিসিবির পণ্য অবৈধভাবে বেচাকেনা ও মজুদ রাখার অভিযোগে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে এক দোকানিসহ ডিলারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হলেন-নাকসী বাজারের লিটন শিকদার (৩৫) ও নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারের টিসিবির ডিলার পরিতোষ কুন্ডু (৬৫)।
এ সময় লিটনের দোকান থেকে টিসিবির ১৮ বস্তা চিনি (বস্তাপ্রতি ৫০ কেজি) এবং ২৪ বস্তা ছোলা (বস্তাপ্রতি ২৫ কেজি) জব্দ করা হয়। লিটন জানান, তিনি পরিতোষ কুন্ডুর কাছ থেকে এসব চিনি ও ছোলা কিনেছেন।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল দুপুরে নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর এলাকায় চাল ডিলার আসাদুজ্জামান মোল্যাকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০টাকা কেজি দরের চাল চুরির অপরাধে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আসাদুজ্জামান সদর উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের আলী আহাম্মদের ছেলে এবং শাহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ২০ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আসাদুজ্জামানের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসাদুজ্জামান ১০টাকা কেজি দরের চাল ৩০কেজির পরিবর্তে ২৫ কেজি দিয়ে জনপ্রতি পাঁচ কেজি করে আত্মসাতৎ করেন।