আজকের নিবন্ধের শিরোনামটির প্রথমাংশ প্রয়াত প্রতিযশা সাংবাদিক এবিএম মূসার অমিয়বাণী। ২০১২ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টেলিভিশন টক-শোতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে তিনি ছয় দশকের সাংবাদিকতায় যুগসেরা ওই স্পর্ধিত উচ্চারণ করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৩ নভেম্বর দৈনিক প্রথম আলোতে ‘চোরদেরই বলবেন, তুই চোর-তুই চোর’ শিরোনামে একটি নিবন্ধও লিখেন তিনি। ‘তুই চোর-তুই চোর’ স্লোগান সংবলিত বড় বড় হরফে পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন রাজধানীজুড়ে তখন শোভা পাচ্ছিল। দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে আমি তখন কর্মরত। পত্রিকা অফিস কিংবা চায়ের কাপে, এমনকি মাঠের রাজনীতিতে ওই স্লোগানে ঝড় ওঠে। ব্যাপক সাড়া জাগে সচেতন মহলে। বাজপড়ে সরকারের মাথায়। টনকনড়ে দুর্নীতিবাজদের। এসবই নিজের দেখা ও অনুভূতি।
নিবন্ধটির শিরোনামের দ্বিতীয়াংশ চলমান মরণব্যাধি নোভেল করোনা নামক ভাইরাসে যখন লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে দিশাহারা করে ফেলেছে, ঠিক এ দুঃসময়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরাসহ কতিপয় জনপ্রতিনিধি নামে জনপ্রতিবন্ধিদের সরকারি ত্রাণের চাউল চুরির মহোৎসবের চিত্র।
দেশজুড়ে করোনার এই মহাদুর্যোগে গরিব-দুস্থদের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত ত্রাণ লুটপাটের ‘নির্ভেজাল মহোৎসব’ চলছে। স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সরকারি দল সমর্থিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা জড়িত বলে গণমাধ্যমে একের পর এক খবর বের হচ্ছে। ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়েও চলছে ব্যাপক চালবাজি। ত্রাণ নিয়ে রয়েছে নয়-ছয় আর দলবাজিরও অভিযোগ।
প্রকৃত দুস্থদের না দিয়ে ত্রাণ চলে যাচ্ছে অনেক নেতা ও জনপ্রতিনিধির নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে। গরিবের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া চালের বস্তা শোভা পাচ্ছে অনেক জনপ্রতিনিধির খাটের নিচে মাটির গর্তে। কোথাও কোথাও বাগান থেকে উদ্ধার হচ্ছে চালের বস্তা। চালের বস্তা পাওয়া যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর গুদামে। গত ১০ দিনে সারা দেশে প্রায় হাজার হাজার বস্তা ত্রাণের চাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। চাল চুরির দায়ে ইতোমধ্যে ডিলার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় অনেক নেতার জেল-জরিমানাও হয়েছে। আবার অনেকেই রয়েছেন পলাতক। ত্রাণ নিয়ে ছবি তুলতে না চাইলে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে অভাবী মানুষের ওপর। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী। এমন প্রেক্ষাপটে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন সরকারের নীতি-নির্ধারকরা।
এমন অভিযোগে গত ১৩ এপ্রিল কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণলয়। ত্রাণ নিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাশত না করার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাৎক্ষণিক বিচার করা হবে অসাধু জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের।’
সাংবাদিক এবিএম মূসার নিবন্ধ পড়ে জানাতে পারি, তিনি হুমায়ূন-ভক্ত ছিলেন না। সেকারণেই তাঁর গল্প-উপন্যাস তাঁকে তেমন আকৃষ্ট করেনি। তবে টেলিভিশনে হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখার জন্য তিনি পাগল ছিলেন। যেখানেই থাকতেন হুমায়ূনের নাটক সম্প্রচারের নির্ধারিত সময়ে বাড়িতে হাজির হতেন। কোনো একটি নাটকের সংলাপে হুমায়ূন আহমেদ টিয়া পাখিকে ‘তুই রাজাকার-তুই রাজাকার’ বুলি শিখিয়ে মাঠে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। নাটকের এ দৃশ্য দেখে হুমায়ূন আহমেদের প্রতি তাঁর মনে অপরিসীম শ্রদ্ধাবোধ জাগে।
ওই সূত্র ধরে বাংলাভিশনে গোলাম মোর্তোজা সঞ্চালিত টক-শোতে হলমার্ক কেলেঙ্কারি, শেয়ার মার্কেট আর ডেসটিনির অর্থ আত্মসাৎ এবং আরও অনেক আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনায় সাংবাদিক মূসার বলেছিলেন, ‘সরকারের যাকে সামনে পাবেন তাঁকে বলবেন, তুই চোর-তুই চোর’।
সাংবাদিক মূসার ওই বার্তা শহরে, গ্রামে-গঞ্জে সাধারণ জনগণের মাঝে ও সরকারি মহলে, হইচই ফেলে। কয়েকজন সরকারি কর্মচারী সরকারে ও ওপর মহলে অবস্থানকারী মান্যবর ব্যক্তি, টেলিফোন ও এসএমএসে অনুযোগ করেছিলেন, ‘মূসা ভাই, আমরা যারা সরকারে আছি তারা কি সবাই চোর?’ এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, যারা হলমার্ক, ডেসটিনি, সোনালীসহ অন্যান্য সরকারি ব্যাংক থেকে সরকারনিযুক্ত পরিচালক ও ব্যবস্থাপকদের যোগসাজশে চার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে, শেয়ার মার্কেটে কয়েক লাখ তরুণকে সর্বস্বান্ত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে এবং অন্যান্য দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাঁদেরই শুধু দেখা পেলেই বলবেন ‘তুই চোর-তুই চোর’। তা ছাড়া যাঁরা টাকা আত্মসাৎ ও চুরির সুযোগ করে দিয়েছেন অথবা চোরদের বিরুদ্ধে যাঁরা রহস্যমূলক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেননি, তাঁদের মুখের ওপর বলতে হবে, ‘তুই-চোর তুই-চোর’।
এছাড়া রিজার্ভচোর, নদীচোর, বালুচোর আর জমিচোরেরা তো রয়েছেনই। সাংবাদিক মূসা ব্যাংক-চোরদের সরাসরি চোর বলেছিলেন। মাননীয় বিচারপতি হাবিবুর রহমান এঁদের বলেছেন ‘বাজিকর’।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক মূসার চোর বলতে শুধু তাঁদের বুঝিয়ে ছিলেন, নাকি সামগ্রিকভাবে সরকারের সবাইকে ‘তুই চোর’ বলেছিলেন? আজকের নিবন্ধেও যারা ত্রাণের চাল চুরিকা-ে জড়িত তারাই শুধু ‘চাল চোর’। সুতরাং সরকারে যারা আছেন, তারা সবাই যে ‘চাল চোর’, তা কিন্তু নয়।
গ্রাম-গঞ্জে চাউর আছে যে, ‘চোরের মন পুলিশ পুলিশ, মাডিতে বাড়ি মাইরলে গুনাহগার চমকে’। সুতরাং যিনি চুরিকা-ে জড়িত শুধু তিনিই সত্য-সাধুবীদের দেখে ভয়ে অস্থির হবেন। অরপদিকে ‘চোর’ বলে যখন একযোগে সবাই চিৎকার দেবেন, তখন সরকারের মধ্যে সাধু ব্যক্তিদের গা জ্বালা করার কারণ নেই, শুধু চোরেরাই চমকাবে।
বলাবাহুল্য যে, সরকারের মধ্যে যারা অতি সৎ-সাধু ব্যক্তি, কিন্তু চোরদের বিরুদ্ধে ত্বরিত পদক্ষেপ না নেওয়া অথবা নিতে অপারগতার কারণেই অনেকে সন্দেহ তালিকাভুক্ত চোর হবে হতে পারেন। তবে জীবনে চুরি না করেও চুরির দায়ভার তাঁদের ওপর কিছুটা হলেও বর্তায়বে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কবিতায় বলেছেন, ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে’। তাই চুরি যিনি করেছেন, চোরের যিনি সহযোগিতা করেছেন, সহ্য করে কোনো আইনি ব্যবস্থা যিনি নেননি, তাঁদের যেখানে যাঁকে পান, বলতে হবে ‘তোরা ত্রাণের চাল চোর’।
খাম-খাম ওয়ালাদের কারও কারও চুরির অপবাদে নিন্দিত হচ্ছেন প্রকৃত আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মী। ব্যথিত-বেদনার্ত হচ্ছেন দল দরদিরা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞায় দল ও সরকার ভিন্ন। অথচ আওয়ামী পদবিধারী সরকারের কতিপয় ব্যক্তির কলঙ্কের বোঝা বইতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে।
যে আওয়ামী লীগকে ১৯৪৮ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে ‘বন্ধুর পন্থায়’ দেখা গেছে, বর্তমানে সেই নামে পরিচয়দানকারী প্রতিষ্ঠান সেটি নয়। বর্তমানের আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড মারা সরকারে যাঁরা আছেন, তাঁদের অধিকাংশ ব্যক্তি এবং অতীতের ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগে আদর্শের অনুসারী এক নয়।
‘বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ’ এখনো অনেকের মনের মাঝে প্রোথিত। তবে দলটির নামের ছাতার ছায়ায় থেকে যাঁরা সরকার গঠন করেছেন, তাঁদের কারও কারও অপকর্মের চিচিং ফাঁকে প্রকৃত আওয়ামী লীগ ব্যথিত। দলে যাঁরা আজ চোর ও বাজিকর দুর্নামে ভূষিত, তাঁরা কি সত্যিই আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাসী? জবাব যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তবে নিশ্চয় কবরে বঙ্গবন্ধুর আত্মা কষ্ট পাবে। আর যদি ‘না’ হয়, তবে তাঁরা কারা?’
বিলেতের ইকোনমিস্ট-এর মতে, নোংরা রাজনীতির কাদার ছিটা পড়ছে তৃণমূল থেকে পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগার দরদিদের গায়ে। এই কাদা যাঁরা বঙ্গবন্ধুর কন্যা থেকে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীর গায়ে ছিটিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশে বললে দোষ হবে না যে, ‘তুই চোর-তুই চোর : তোরা ত্রাণের চাল-চোর’।
রোজগার্ডেনে ১৯৪৯ সালে যে দলটির জন্ম হয়েছিল, সেটি ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইনের মাধ্যমে বাতিল করে দিয়েছিলেন। কয়েক বছর পর আইয়ুব খানের ফরমানের বলে সব রাজনৈতিক দল পুনরুজ্জীবিত করার অনুমতি দেওয়া হলে বৈরুতে চিকিৎসাধীন নেতা শহীদ হোসেন সোহরাওয়ার্দীর ইচ্ছার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নতুন আওয়ামী লীগ গঠন করেন। বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক তিরোধানের পর বিপর্যস্ত-দিশেহারা দলটিকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন ইডেন হোটেল কাউন্সিল সভায় নিবেদিতপ্রাণ আওয়ামী লীগার তথা বঙ্গবন্ধুর নীতির অনুসারীরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আবদুল মালেক উকিল, ড. কামাল হোসেন, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, মরহুম আবদুর রাজ্জাক, আব্দুল জলিল প্রমুখ। এই হলো দলটির জন্মান্তর।
মনের গহনে বঙ্গবন্ধুর প্রোথিত মায়া-দুর্বলতা থাকায় রাষ্ট্র নায়ক জিয়াউর রহমানের অনুকম্পায় অনুমতিপ্রাপ্ত পুনরুজীবিত আওয়ামী লীগের পতাকাবাহী দলটিকে অনেকের মতো সাংবাদিক এবিএম মূসা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। জনাব মূসা আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচন করে এমপিও হয়েছিলেন। তিনি প্রায়ই বলতেন, নৌকাকে যাঁরা দুর্নীতি ও চুরিচামারির লগির খোঁচায় ফুটো করে ডুবিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বলবেন ‘তুই চোর-তুই চোর’।
বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বে তাঁর জনপ্রিয়তার ভিত্তির ওপর নতুন করে গঠিত আওয়ামী লীগ সারা দেশে গণজাগরণ ঘটিয়েছে, ছয় দফা আন্দোলন করেছে, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। দুর্ভাগ্য হলো, নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা, জেল-জুলুম-নির্যাতনের মধ্যে যে আওয়ামী লীগ টিকে ছিল, তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশের জন্ম দিল, সেটিকে বঙ্গবন্ধু সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের মাধ্যমে নিজেই বিলুপ্ত করে দিয়ে ছিলেন। জন্ম দিলেন নতুন দল ‘বাকশাল’। আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামী ও নির্যাতিত জননেতা কেনো এই পদক্ষেপটি নিয়েছিলেন, সেই প্রেক্ষাপট অন্তত আমার মতো অজ্ঞ সাংবাদিকের অজানাই রয়ে গেলো।
মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সেই দলটিকে আওয়ামী লেবাস পরে আজ সরকারে অংশ নিয়ে জনগণের কাছ থেকে, তৃণমূলের কর্মীদের আওতা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে কলঙ্কিত করছে, আমার লেখায় শুধু তাদের নিন্দা জানাই, দলের অন্য কারও নয়। শুধু তাঁদেরই দেখা পেলে বলতে হবে, ‘তুই চোর-তুই চোর : তোরা ত্রাণের চাল চোর।’
গাঁজার নৌকা পাহাড় দিয়ে যাওয়ার আওয়ামী রসালো জমানায় মহামারী করোনাকালে আমার ‘চোর নিবন্ধ’ পড়ে অনেকেই হয়তো মর্মাহত হতে পারেন। তাঁদের জন্য ব্রিটিশ কৌতুক রইলো। ব্রিটিশ নাট্যকার পরিহাসপ্রিয় বার্নার্ড শ-কে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এক অনুষ্ঠানে। তৎকালীন সরকারের কতিপয় ব্যক্তির দুর্নীতি নিয়ে দেওয়া বক্তব্যে বার্নাড শ বলেছিলেন, ‘এই সরকারের অর্ধেক লোকই চোর’। অনুষ্ঠানে গুঞ্জন শুরু হলো। কেউ কেউ বার্নাড শ-কে অপমানও করতেও দ্বিধা করলেন না। অবস্থার বেগতি দেখে অতঃপর বার্নাড শ তাঁর মন্তব্য ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এই সরকারের অর্ধেক ব্যক্তিই সাধু’। মূহুর্তে গুঞ্জন থেমে গেলো, হাততালি দিতে থাকলেন সবাই!
চুরির ধরন অনুযায়ী চোরের মর্যাদা নির্ধারিত হয়। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে খাম-খাম ওয়ালারা যে ধরনের চুরি করে তাতে অহংকার করার মতো মানসিকতা চলে আসে। আমরা সাধারণ মানুষ গরু-ছাগল চোরের সাথে তাদের তুলনা করতে পারিনা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই শীর্ষ পর্যায়দের আলাদা একটা গুরুত্ব থাকে, হোক না সেটা সুখ্যাতি অথবা কুখ্যাতি, তারা তো শীর্ষেই।
১৯৭২ সালে নিঃস্ব সম্পদহীন নতুন রাষ্ট্রটি পরিচালনায় দিশেহারা রেসকোর্সে স্বাধীনতা-উত্তর প্রথম জনসভায় ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি বিদেশ থেকে ভিক্ষে করে রিলিফ আনি, চাটার দল সব চেটে খাচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধু যদি আজ বেঁচে থাকতেন, বাংলাদেশের চাটাচাটির বর্তমান রূপটি দেখে তবে হয়তো তিনি বলতেন, ‘এখন দেখি চাটছে না, গো-গ্রাসে গাপুস গুপুস গিলছে।’
(লেখক : এম. কে. দোলন বিশ্বাস, দৈনিক সংবাদের সাবেক সহ-সম্পাদক)