কেউ পড়াশোনা করছেন, কেউ চাকরি। আবার কেউ পড়াশোনা শেষ করে মাঠে চাষের কাজ করছেন। এমনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের ৭ যুবক বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি কষ্টে থাকা সমাজের খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
যুবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের মধ্যপাড়ার একটি লিচু বাগানের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সবজি বিক্রি করছে তারা। পাশ্ববর্তী চুরামনকাঠি ও সাতমাইল এলাকা থেকে সবজিগুলো সংগ্রহ করেন। সবজি বিক্রিতে যাতায়াত খরচসহ সীমিত লাভ করা হয়। যেটা দিয়ে গ্রামের অসহায় ও দুস্থ ২০ পরিবারকে সহায়তা প্রদান করেন তারা। ২০ পরিবারকে সহায়তা প্রদান করে যে অর্থ বেঁচে থাকে সেটিও গ্রামের একটি মাদ্রাসায় দান করা হয়। এছাড়াও গ্রামের মানুষের করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচতেন করতে বিভিন্ন প্রচারনা ও জীবানুনাশক স্প্রে করছেন এই যুবকেরা।
যুবকদের মধ্যে অনার্স পড়ুয়া সামিউল ইসলাম জানান, ঢাকায় চাকুরিজীবি হারুণ নামে এক ভাই আমাদের অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। আমরা ৭ জন যুবক স্বেচ্ছায় এই কাজ করছি। প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার ভোরে পাশ্ববর্তী দুইটি গ্রাম থেকে বাই সাইকেলে করে সবজি সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। এরপর গ্রামের একটি লিচু বাগানের মধ্যে সেগুলো বিক্রি করি। সবজি বিক্রির লাভের টাকা দিয়ে করোনা সংকটে গ্রামের প্রায় ২০ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করছি। বাকি লাভের টাকা গ্রামের মাদ্রাসায় প্রদান করি।
আরো জানান, তিনিসহ এ কাজে সহযোগিতা করেন সাইদুর রহমান, সুমন হোসেন, টিটু হোসেন, নিরব হোসেন ও বিল্লাল হোসেন। তারা সবাই সপ্তাহে দুই দিন ভাগ ভাগ করে দায়িত্ব পালন করেন। সন্ধ্যার দিকে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় ও দুস্থদের সহযোগিতা করেন। যেন অন্য কেউ দেখে না ফেলে। তারা সহায়তা পাওয়া কোন ব্যক্তির ছবি বা নাম প্রকাশ করেন না। এ ছাড়া এই যুবকেরা প্রতিদিন গ্রামে জীবানুনাশক স্প্র্রে করে।
ওই যুবকদের আরেকজন সাইদুর রহমান জানান, করোনা সংকটে খেটে খাওয়া মানুষের কোন কাজ নেই। তারা এই সবজি বিক্রি করে অসহায় ও দুস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছে। করোনা সংকটে সমাজের সকল যুবক যেন তাদের মত অসহায় ও দুস্থদের পাশে দাঁড়ান এই আহবান জানান তিনি।