বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সেনা সদস্য নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কার্ত্তিকপুর গ্রামের জাফর শেখের ছেলে রাজু শেখ (২৯) শুক্রবার তার নিজগ্রামে পারিবারিক গোরস্তানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে তার নিজ বাড়ি কালিয়ায় উপজেলার কার্ত্তিকপুর গ্রামের পারিবারিক গোরস্তানে সেনাবাহিনীর নিয়মানুযায়ী যথাযোগ্য মর্যাদায় তার লাশ দাফন করা হয়।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে তার লাশ নিয়ে কালিয়া সরকারী শহীদ আবদুস সালাম ডিগ্রী কলেজের মাঠে অবতরণ করে। তার লাশ এক নজর দেখার জন্য পূর্ব থেকেই সহস্রাধিক শোকাহত মানুষ মাঠের চারিপাশে অপেক্ষমান ছিলেন। হেলিকপ্টার থেকে তার লাশ নামানোর পর ওই কলেজ মাঠেই তার প্রথমদফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার দ্বিতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার নিজগ্রামের বাড়িতে।
প্রথম দফা জানাযা শেষে তার লাশ সরকারি এ্যাম্বুলেন্সেযোগে তার নিজবাড়ি কালিয়া পৌরসভার কার্ত্তিকপুর গ্রামে নিযে যাওয়া হয়। নিহত রাজুর লাশ তার বাড়িতে পৌঁছালে সর্বত্রই শোকের ছায়া নেমে আসে। স্ত্রীসহ তার স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তার স্ত্রী শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তার একমাত্র আদরের শিশুপুত্র কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না। সে শুধু এদিক-ওদিক মানুষের মুখের দিকে তাকাতে থাকে। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। অবুঝ শিশুটি হয়তো জানেনা, তার বাবা আর নেই। দেশের জন্য চিরবিদায় নিয়ে পৃথিবী থেকে চলে গেছেন। তার বাবা আর কোনদিন ফিরে আসবে না তাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিহত সেনা সদস্য রাজু শেখ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে একটি ড্রাইভার পদে নিযুক্ত ছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ও বিভিন্ন প্রশাসনকে মাঠ পর্যায়ে সহযোগিতা করার জন্য তিনি বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে সেনাবাহিনীর একটি লরিতে ২৫জন সেনা সদস্য নিয়ে সাভার থেকে মুন্সিগঞ্জ যাচ্ছিলেন। ঢাকার শেরে-ই-বাংলা রোডে পৌঁছালে উল্টো পথ দিয়ে হঠাৎ করে সামনে আসা একটি রিক্সাকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারের রেলিং ভেঙ্গে সেনাবাহিনীর লরিটি উল্টে গিয়ে ওই দুর্ঘটনায় ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় রাজু শেখসহ পাঁচজন নিহত ও অন্যরা আহত হন।