দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পশুখাদ্যের দাম বেড়েই চলেছে। গম থেকে তৈরি ময়দার চেয়ে খোসার দাম কেজিপ্রতি ১৫ টাকা বেশি। এক সপ্তাহ আগে স্থানীয় হাটবাজারে প্রতি কেজি গমের খোসার দাম ছিল ৩২ টাকা এবং প্রতি কেজি খোলা ময়দার দাম ২৭ টাকা। কিন্তু গত রোববার প্রতি কেজি গমের খোসা ৩৯ টাকা এবং ময়দা বিক্রি হয়েছে ২৪ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে ময়দার দাম কেজিতে ৩ টাকা কমলেও খোসার দাম বেড়েছে কেজিতে ৭ টাকা।
এ ছাড়া কারখানায় তৈরি পশুখাদ্যের দামও বাড়ছে। সাত দিনে এর দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়ে শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৩৫-৩৬ টাকায়। এর আগে প্রতি কেজির দাম ছিল ৩০-৩১ টাকা। এ সময়ে ছোলার খোসার দাম কেজিতে ১২ টাকা বেড়ে ২০ টাকায় হয়েছে।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের পশুখাদ্য বিক্রেতা আহম্মদ আলী জানান, এক মাস আগে ২৫ কেজি ওজনের গোখাদ্যের এক বস্তার দাম ছিল ৬০০ টাকা। এখন তা ৮০০ টাকার ওপরে। গমের ভুষি ও ছোলার খোসার দাম কেজিতে এক সপ্তাহে বেড়েছে ৭-১২ টাকা। অথচ গমের ময়দার দাম ওই সময়ের মধ্যে কেজিতে ৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকায়।
আরেক পশুখাদ্য বিক্রেতা লোকমান আলী বলেন, সামনে রমজান ঘিরে লাভ বেশি পাওয়ার আশায় বড় ব্যবসায়ীরা গম, ছোলা, না ভেঙ্গে মজুত করে রাখছেন। এ কারণে গম ও ছোলার খোসার সংকট হওয়ায় দাম বাড়ছে। আর এ দেশে যে জিনিসের দাম বাড়ে, তা কখনো কমে না।
খামারি উত্তম কুন্ডু বলেন, ২০০ কেজি ওজনের একটি গাভিকে ঘাস ও খড়ের পাশাপাশি দিনে কমপক্ষে ৩-৪ কেজি গমের ভুসি, ৭-৮ কেজি কৃত্রিম খাদ্য খাওয়াতে হয়। সব মিলে শ্রম বাদে একটি গাভিকে প্রতিদিন খাওয়াতে বর্তমানে খরচ হচ্ছে প্রায় ৩৫০ টাকা। এই গাভি গড়ে দুধ দেয় ১২ লিটার। বর্তমানে প্রতি লিটার ৩৫-৩৫ টাকা হিসেবে দুধ বিক্রি হয় ৪২০ টাকা। অর্থাৎ শ্রমের খবর বাদ দিলেও বর্তমানে গাভি পালন করে লোকসান হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়ীতে খামারসহ বাড়ীতে থাকা গরুর সংখ্যা প্রায় দুই লাখ, মহিষ প্রায় ৮৯ টি এবং ছাগল প্রায় ৯৭ হাজার এবং ভেড়া প্রায় ২৪ হাজার।
উপজেলা প্রাণিসম্পদক কর্মকর্তা ডা. আহসান হাবীব বলেন, ‘পশুখাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে আমাদের তেমন করণীয় নেই। সুযোগটা পশুখাদ্য ব্যবসায়ীরা কাজে লাগিয়ে অনেক সময় ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছেন। পশুসম্পদ টিকিয়ে রাখতে এসব বিষয়ে উচ্চপর্যায়ে সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা প্রয়োজন।