করোনাভাইরাসের কারণে, রাজশাহী জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এর ভেতর, পুঠিয়া উপজেলার ২৫টি স্থানে পুকুর খননের হিরিক এবং অর্ধশতাধিক স্থানে মাদকদ্রব্য কেনাবেচা রমরমা ব্যবসা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীদের অভিযোগ, করোনা মহা দুর্যোগের ভেতর থানা পুলিশ পুকুর খননকারী এবং মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে প্রতিনিয়ত টাকা নেয়ার ফলে এগুলো বন্ধ হচ্ছে না।
জানা গেছে,সারা দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায়। সরকার এই রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ ঠেকাতে লোকসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য বারবার বলে আসছেন। সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, জমির শ্রেনী পরির্বতন না করে ফসলী জমিতে পুকুর খননের কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীদের অভিযোগ, দেশে এখন করোনাভাইরাস নিয়ে মহা দুর্যোগ চলছে। এই সময়, পুকুর খননের মাটি রাস্তায় ফেলে এলাকা ধুলাময় করে প্রতিববন্ধকতা সৃস্টি করা হচ্ছে। গত ১৩ এপ্রিল শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল তার ফেসবুক আইডিতে বলেন, করোনাভাইরাসের সমস্যার মধ্যে চলছে, কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খননের কাজ। শিলমাড়িয়া ইউপির শতকরা ৪০% কৃষি ফসলী জমি পুকুর খননের কাজ কোথাও চলছে, কোথাও শেষ হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল উপজেলার গোপালহাটি এক ব্যক্তির ছোট পুকুর সংস্কার করতে শুরু করলে। পুঠিয়া থানার উপ-পরির্দশক সাইফুল ইসলাম পুকুর খনন করা বন্ধ করে আসেন। তারপর থেকে উপ-পরির্দশক থানায় দেখা করার জন্য বারবার ফোন দেয়। উপজেলায় থানা পুলিশকে টাকা না দিয়ে, কেউ পুকুর খনন করার নজির নেই। বর্তমানে নতুন করে পুকুর খননে কাজ চলছে। ভালুকগাছি, বেলপুকুর, জিউপাড়া ইউপিতে।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ দিলে থানা পুলিশ পুকুর খননের কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। তারপর কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর পূর্ণরায় আবার খনন কাজ শুরু হচ্ছে। এলাকারবাসীদের অভিযোগ, উপজেলায় কোনো পুকুর খনন দীর্ঘ দিন যাবত বন্ধ হয়ে থাকছে না। কয়েকটি পুকুর আবার বিলে বৃষ্টির পানি প্রবাহের স্থলে খনন করার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে এলাকার বেশীর ভাগ সাধারন কৃষক বিলে পানি বন্দি থেকে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকার ফসলহানী হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেখা গেছে, বেশীরভাগ খননকৃত পুকুর গুলো ধান চাষের উপযোগী কিংবা বিভিন্ন বিলের নিচু জমিতে। অনেক স্থানে বর্ষা মৌসুমে বিলের পানি প্রবাহের গতিপদে পুকুরের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। পুকুর খননকারীরা প্রথমে কৌঁশলে ফসলী জমিতে এলাকার শ্রমিক দিয়ে পুকুর খননের পাড় বেঁধে নিচ্ছেন। তারপর পুকুর সংস্কার করার নামে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আবেদন করে পুকুর খননের কাজ সম্পন্ন করছে। পুকুর খননকারীরা রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারায় উপজেলা প্রশাসনকে চাপ দিলে তারা ঢিলেঢালা ভাবে পুকুর খননের ওপর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে।
করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অনেক মানুষ বাড়িতে অবস্থান করছে। কিছু মানুষ দীর্ঘদিন বাড়ির ভেতর অলস ভাবে বসে থাকার জন্য। তাদের মাঝে একটা হুতাশা কাজ করছে। হুতাশাকে কাজে লাগায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় উপজেলার অনেক স্থানে মাদক ইয়াবা, হিরোইন,ফেনসিডিল, গাঁজাসহ বিভিন্ন রকম মাদকদ্রব্য কেনাবেচা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে অভিযোগ করছে। উপজেলার ভেতর অনেক যুবক ছেলেরা কোনো কাজকর্ম না থাকার জন্য এক সঙ্গে কয়েক জন মিলে আড্ডা দিচ্ছে। এবং মাদক সেবন করে সময় কাটাচ্ছে। উপজেলার সব চাইতে বেশি মাদকদ্রব্য কেনাবেচা হয় বানেশ্বর বাজারে। হিরোইন পাড়ায় গভীর রাত পর্যন্ত হিরোইন কেনাবেচা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও ঝলমলিয়া, সেনভাগ, ধোপাপাড়া, মোল্লাপাড়া, সাধনপুর, ধোকড়াকুল, পশ্চিমভাগ, বাশবাড়িয়া, কার্তিকপাড়া, বেলপুকুর, কান্দ্রা গুচ্ছগ্রাম, বাজারসহ উপজেলা সদরের প্রায় দশটি স্থানে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করতে দেখা যায় বলে একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ রয়েছে। বানেশ্বর বাজারের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায় মিলনসহ ১৫ জন মাদক ব্যবসায়ীকে দিয়ে বিভিন্ন রকম মাদক ব্যবসা করাচ্ছেন। পুঠিয়া থানার উপ-পরির্দশক আঃ সালাম। তিনি বানেশ্বর বাজারের একটি বাড়িতে রাতে ডিউটি করার নাম করে দীর্ঘক্ষণ বাড়িটিতে অবস্থান করে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে পুিিঠয়া থানার কর্মকর্তা ইনর্চাজ রেজাউল ইসলাম বলেন,পুকুর খনন এবং মাদকের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এগুলো আমার জানা নেই। যদি কোনো পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসের ভেতর পুকুর খনন এবং মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।