করোনা ভাইরাস। এই নামটি বিশ্ববাসীর কাছেই মহা আতঙ্ক। লকডাউন কিংবা সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলছে দেশে দেশে। এজন্য বাসা-বাড়ী থেকে অনেকেই বাইরেও বের হচ্ছেন না। বর্তমানে কানাডায় করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই বড় হচ্ছে। তাছাড়া সেখানে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষজন। আতঙ্ক যেন চারদিকে। হাহাকার আর কান্নাতো আছেই পাড়ায় পাড়ায়। আর এই আতঙ্কের মুহুর্তে মানুষের হাহাকার চলছে সন্দ্বীপে। এমন সময়ে নাড়ির টানে সূদুর কানাডা থেকেও সন্দ্বীপের অসচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন আহছান উদ্দিন পারভেজ। মোবাইল ফোনে তিনি যোগাযোগ রাখছেন সন্দ্বীপের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর সাথে।
একাধিক সূত্র জানায়, সন্দ্বীপে তরুণ প্রজন্মের কাছে ব্যাপক পরিচিত কানাডা প্রবাসী আহছান উদ্দিন পারভেজ। তিনি মাষ্টার আবদুল মালেক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। পিতার নামে এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর এই পর্যন্ত প্রায় ২০লক্ষ টাকা গরীব মানুষদের জন্য ব্যয় করেছেন। প্রচার বিমুখ আহছান উদ্দিন পারভেজ নিঃস্বার্থভাবে গোটা উপজেলা ব্যাপী আত্মমানবতার সেবায় নিজকে নিয়োজিত রেখেছেন বহু বছর। তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। তবুও মানুষের উপকারের সময় সব দলের লোককে সমানভাবে দেখেন তিনি। এজন্য তাঁর প্রতি মানুষের আস্থার জায়গাও অনেক উঁচু। সাম্প্রতিক সময়ে কানাডা থেকেও সন্দ্বীপের অসচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন আহছান উদ্দিন পারভেজ। এই সময়ে কয়েক দফায় অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকার নগদ অর্থ পাঠিয়েছেন গোপনে। আবার সেই অর্থ স্বজনদের মাধ্যমে অতি গোপনে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বসবাসকারী অসহায় মানুষের বাসায় বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন। আর এই নগদ টাকা পেয়ে গরীব এবং নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা অনেক খুশি।
আহছান উদ্দিন পারভেজের বন্ধু আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের সন্দ্বীপে বহু মানুষ প্রবাসে থাকেন। কিন্তু এই প্রবাসীরা মানুষের বিপদে সাহায্য করেন না। উন্নত রাষ্ট্রে বসবাসকারী সবাই একযোগে হতদরিদ্রদের সহযোগিতা করলে কেউ গরীব থাকবেন না। প্রবাসী এবং দেশের শিল্পপতিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ না করলে এই সময়ে সন্দ্বীপে মানুষের হাহাকার দূর করা সম্ভব নয়। রোকেয়া বেগম নামের এক শিক্ষিকা বলেন, সন্দ্বীপে কিছু প্রবাসী আছেন; তারা নিজের নামের জন্য প্রকাশ্য মানুষকে যা দান-সদকা করেন। আবার তার চেয়েও ১০গুণ বেশি মিডিয়ায় প্রচার করেন। এটা বেদনা দায়ক। তবে এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম আহছান উদ্দিন পারভেজ। তিনি যা কিছু করেন, প্রকাশ করেন না। তাছাড়া তিনি গরীব মেয়েদের বিয়ে, যুবকদের বিদেশ যাত্রা, চিকিৎসা, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া, কিংবা চাকুরীতে যোগদানের সময় সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। স্কুল-কলেজ, মসজিদণ্ডমাদ্রাসা এবং সামাজিক সংগঠনেও আর্থিক অনুদান দিয়ে তৃপ্তিবোধ করেন। মানুষের সাথে ব্যবহারেও তাঁর অহংকার নেই। নিজ দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও আত্মীয়-স্বজনরা এজন্য তাঁকে ভালবাসেন। মানুষের কল্যাণে ভাল ভাল কাজ করতে চান। কানাডায় ব্যস্ত থাকার পরেও সময় দেন বেশ।
সূত্র জানায়, বছরে একবার হলেও সন্দ্বীপে আসেন তিনি। মানুষের বিপদে ছুটে যাওয়া যেন তাঁর এক ধরণের নেশা। ছাত্রজীবন থেকে এই পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের সাথে তিনি সম্পৃক্ত আছেন। এজন্য মামলা-হামলাও হয়েছে বহুবার। রাজনৈতিক পদণ্ডপদবীর অনেকবার অফার এলেও তিনি তা ফিরিয়ে দেন। তবে কানাডা ও সন্দ্বীপে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের সাথে তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন। মিষ্টি ভাষার অধিকারী আহছান উদ্দিন পারভেজ। সন্দ্বীপে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এলাকায় একজন সফল সমাজসেবক হিসেবে তিনি খ্যাতি পেয়েছেন। রাজনীতির অর্থ মানুষকে ভালবাসা দেওয়া ও নেওয়া-এটার উদাহরণও তিনিই সৃষ্টি করেছেন। কারণ; তাঁর মধ্যে কোনো লোভ-হিংসা নেই। সাংবাদিকরা আহছান উদ্দিন পারভেজের সাথে এর আগে বেশ কয়েক বার যোগাযোগ করেছিল। এ সময় তিনি তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে মিডিয়ায় কিছু না লিখার জন্য বার বার অনুরোধ করেন। তবে আজীবন তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন বলে জানাগেছে।
তাঁর পিতা মরহুম মাষ্টার আবদুল মালেকও অভাবী মানুষদের প্রিয় ছিলেন। সমাজসেবায় ছিলেন নিবেদিত। আহছান উদ্দিন পারভেজের অন্য ভাইয়েরা তাঁকে মানুষের পাশে থাকতে সব সময় উৎসাহিত ও সহযোগিতা করেন। তাঁর স্বজনরা সমাজে অনেকেই প্রতিষ্ঠিত এবং প্রবাসী। আহছান উদ্দিন পারভেজের মতে, পরের দুঃখ নিয়ে যারা চিন্তা করেন; তখন তাদের নিজেদের দুঃখ ও অভিমান বলে কিছু থাকেনা। আর অল্পতে সন্তুষ্ট থাকা ভাল। মহান রবের প্রতি সব সময় শোকরিয়া হিসেবে আলহামদুলিল্লাহ পড়া উত্তম কাজ। পারভেজ অতীতে সাধারণ মানুষের যেভাবে পাশে ছিলেন, সামনেও থাকবেন। তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন তাঁর বন্ধমহলের মাধ্যমে।