সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন চৌধুরী ও ইউপি সচিব মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) রাতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সৈয়দ মোঃ আজিমউদ্দিন বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কর্মহীন হয়েপড়া দিনমজুর অসহায় দরিদ্র পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য জয়নগর ইউনিয়নে ৩ মেট্রিক টন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। ৯ এপ্রিল বরাদ্দকৃত ত্রাণের উক্ত চাল বিতরণ করা হয়। চাল বিতরণ শেষে ১২ এপ্রিল ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন চৌধুরী মাস্টার রোল তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের ত্রাণ শাখায় দাখিল করেন। এরপর জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন চৌধুরী ও সচিব মহিদুল ইসলাম যোগসাজশে প্রকৃত ব্যক্তিদের নিকট চাল বিতরণ না করে ভুয়া মাস্টার রোল দাখিল করেছেন মর্মে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি তদন্ত করেন। তদন্তকালে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় যে, ওই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ৫০টি নামের মাস্টার রোলের মধ্যে ২৮টি নামের অনুকূলে চাল বিতরণ না করে ভুয়া মাস্টার রোল দাখিল করেছেন। জনপ্রতি ১০কেজি হারে ২৮টি নামের বিপরীতে ২৮০কেজি চাল বিতরণ না করে আত্মসাত করেছেন। এরপর মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সৈয়দ মোঃ আজিমউদ্দিন বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে নড়াগাতি থানায় মামলা প্রেরণ করেন। যা পরবর্তীতে নড়াগাতি থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করে মঙ্গলবার দুদকে প্রেরণ করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেবার পর থেকেই আসামীরা আত্মগোপনে রয়েছে।
এ বিষয়ে জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মেম্বারদের সমস্ত জিআরের মাল ভাগ করে দিয়েছি। তারা আমার নিকট থেকে স্বাক্ষর করে এ জিআরের মাল নিয়েছেন।’
এ বিষয় নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুন বলেন, ‘উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়েরকৃত অভিযোগটি আমলে নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বুধবার দুদক যশোর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।’
একই প্রসঙ্গে কালিয়ার ইউএনও মো.নাজমুল হুদা বলেন, ‘সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাতের ঘটনায় জয়নগর ইউপির চেয়ারম্যান ও সচিবের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।