আনোয়ারুল ইসলাম রুমেল। পেশায় একজন শিপিং ব্যবসায়ী। যিনি এই সময়ে হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শুধু এখন নয়; আগেও মানুষের জন্য নানাবিধ কাজ করেছেন। শিক্ষা বিস্তারেও তাঁর অবদান অনেক। ছোট্টবেলা থেকেই তিনি মানবসেবার নজির সৃষ্টি করেছেন। কারও উপকার করতে পারলেই তিনি নিজকে ধন্য মনে করেন। মানুষের কষ্ট দেখে তাঁর নিরবতা নেই। যতটুকু করেন তাঁর প্রচার করতেও তিনি আগ্রহী নন। বিশেষ করে মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের তিনি কখনো সাক্ষাতকার দিতে সম্মতি হননি। কারণ; তিনি বরাবরেই প্রচার বিমুখ। অন্যদিকে সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং নিজের ব্যবসা নিয়ে তিনি সব সময়ই ব্যস্ত থাকেন। এজন্য পাড়া-মহল্লার দোকান-পাটে তাঁকে তেমন দেখা যায়না। তবে কারও বিপদের খবর শুনে জরুরী কাজ রেখেও এলাকায় ছুটে আসেন। এসকল কাজের কারণে আনোয়ারুল ইসলাম রুমেল সকলের প্রিয় হয়ে উঠেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, হালিশহরের আই ব্লকে ‘মাহমুদা আক্তার ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন আনোয়ারুল ইসলাম রুমেল। এরপর বহুদিন যাবত সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। তাঁর পরিকল্পনা হচ্ছে জনকল্যাণমুলক কাজ করা। এই ফাউন্ডেশনের তিনি চেয়ারম্যান। বর্তমানে দেশ-বিদেশে খাবার নিয়ে চরম হাহাকার চলছে। দিশেহারা মানুষ। সম্পদ থাকলেও ঠিকমত খাবার খেতে পারছেন না কোটি কোটি মানুষ। ঠিক বাংলাদেশে নিম্মবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চ বিত্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ করোনা ভাইরাস নিয়ে মহা টেনশনে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যু হচ্ছে মানুষের। এর মধ্যে নিম্মবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত মানুষ গুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে তাদের সমস্যার বহরও বেশি। এমতাবস্থায়; নিরবতা পালন না করে অসংখ্য পরিবারকে গোপনে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে এগিয়ে এসেছেন তিনি। গত এক সপ্তাহে কয়েক হাজার পরিবারের সদস্যদেরকে বাসায় বাসায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
অতিগোপনে এই কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁর পিতা, স্ত্রী ২ ভাই ও নিকটজনেরাও ছিলেন খুবেই আন্তরিক। আবার অনেক পরিবারের সদস্যদেরকে আনোয়ারুল ইসলাম রুমেল আর্থিক অনুদানও পাঠিয়েছেন। এভাবে হালিশহরের বহু পরিবারের মাঝে হাসি ফোটাতে সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন। তিনি ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত আছেন। কিন্তু বিসাসিতা মোটেও পছন্দ করেন না। এভাবে খাদ্যপণ্য গোপনে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম রোজাতে চলবে। এমন তথ্যটি নিশ্চিত হওয়া গেছে তাঁর বন্ধু মহল থেকেই। এর আগে তিনি গত মাসে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৮ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেন। এছাড়াও প্রতিবছর হালিশহর বিডিআর মাঠে ঐতিহাসিক তাফসীরুল কোরআন মাহফিলের অন্যতম পৃষ্টপোষক তিনি। শিক্ষাজীবন থেকেই তিনি মানুষকে সাহায্য করতেন। আই ব্লক এবং আশপাশের একাধিক জামে মসজিদ, মাদ্রাসা ও স্কুলের উন্নয়নের জন্য তিনি আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছেন। তিনি সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, গরীব মেয়ের বিয়ে, চিকিৎসা, লেখাপড়ায় এবং সামাজিক সংগঠনে সাধ্যমত আর্থিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন। যে কোনো শ্রেণির মানুষের সাথে ব্যবহারে তাঁর অহংকার নেই। মানুষের কল্যাণে বেশকিছু ভাল কাজ করছেন তিনি। সময়ও দিচ্ছেন মানুষের জন্য।
হালিশহরের বহু দ্বীনি প্রতিষ্ঠান আনোয়ারুল ইসলাম রুমেলের অবদানে আলোকিত হয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বস্ত ব্যক্তি। এর কারণ; গত দুই যুগ ধরে সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ফলে তিনি স্বীকৃতি স্বরূপ বেশকিছু সম্মাননা পদকও পেয়েছেন। ওদিকে মাদক, যৌতুক ও বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে তিনি বরাবরেই কাজ করছেন। ফলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে তাঁকে একটি জনপ্রিয় পত্রিকার প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়েছে। তাছাড়া একাধিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। যেগুলোর নাম তিনি প্রচার করতে আগ্রহী নয়। শুক্রবার সকালে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে গরীবে নেওয়াজ উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন, আনোয়ারুল ইসলাম রুমেল বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি মানুষের চাওয়া পাওয়ার মূল্য দিতে জানেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গোপনে অনেক অসহায় পরিবারের শিক্ষার্থীদের তিনি পড়ালেখার ব্যবস্থা করেছেন। বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল এবং মসজিদে তাঁর দানের কারণে মানুষ এলেম শিক্ষা পাচ্ছেন। এলাকার সুন্দর পরিবেশ হয়েছে। পবিত্র কোরআনের খেদমতে তিনি বিশেষভাবে অবদান রেখেছেন। আজেবাজে কাজে তিনি কখনো ছিলেন না। মানুষ এবং সমাজকে আলোকিত করার জন্য তাঁর মতো আরো দানশীল মানুষ প্রয়োজন। ভালকাজে অর্থনৈতিক সহযোগিতা না থাকলে অন্যরা ভাল কাজ করতে উৎসাহিত হবেন না। নিউ আই ও এ ব্লক মসজিদের সামনে নিয়মিত ভিক্ষা করেন জয়নাল মিয়া। তিনি বলেন, আনোয়ারুল ইসলাম রুমেল নিজকে প্রচার করতে চান না। তবে গোপনে গোপনে মানুষকে সাহায্য করেন। তাছাড়া অনেক অসুস্থ মানুষের চিকিৎসায় তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন। বাইরে এসব ঘটনা প্রকাশ করছেন না। তাঁর জন্য আমরা দোয়া করি। ভাল মানুষকে অবশ্যই আমরা সমর্থন দিব।
হালিশহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও কেন্দ্রীয় এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে আনোয়ারুল ইসলাম রুমেলের সু-সম্পর্ক রয়েছে। নিজের সততা, কঠোর পরিশ্রম এবং মনোবল থাকলে যে কোন বাধাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া যায়; এমনটাই বিশ্বাস করেন তিনি। শুধুমাত্র মানুষকে ভালবেসে আরো এগিয়ে যেতে চান তিনি। আবার বর্তমান সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী এবং এমপির সাথে তাঁর সু-সম্পর্কের কথা এলাকার বহু মানুষ জানেন। মানুষের কল্যাণে নিবেদিত আনোয়ারুল ইসলাম রুমেল নি:স্বার্থভাবে এসব কাজ করছেন। তাঁর ব্যক্তিগত কোনো ফায়দার জন্য নয়; শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায়-ঠিক এমনটাই জানালেন এলাকায় বসবাসকারীরা।