সংক্রমিত এলাকা থেকে বাড়ী ফেরা ও আউস ধান কাটা শ্রমিকদের প্রবেশ করার ফলে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বরেন্দ্র অঞ্চল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও রাজশাহীর সমন্বিত বরেন্দ্র অঞ্চলে চলতি আঊস মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন শত শত ধান কাটা শ্রমিক ঢুকছে। করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বরেন্দ্র অঞ্চলে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য সংক্রমিত এলাকা থেকে লোকজন বাড়ীতে এসেছে। ফলে মহামারী করোনা সংক্রমনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বরেন্দ্র অঞ্চল।
সারা দেশের মত এ অঞ্চলে স্থানীয় প্রশাসন করোনায় আক্রান্ত সন্দেহভাজনদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করেছেন। উপজেলা ও জেলাসদর হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। হাটবাজার ও বিপনিবিতান বন্ধ রয়েছে। নিত্যপণ্যের দোকান দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে। হাটবাজারগুলিকে খোলা স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আর মহামারী করোনায় বেকার হয়েপড়া কর্মহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এতকিছুর পরও মহামারী করোনার লাগাম টানতে সক্ষম হয়নি বাংলাদেশ। সরকার জনসাধারণকে সচেতন ও পূণর্বাসন করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। দূর্যোগকালে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, মাস্ক ও খাদ্যসামগ্রী।
সরকারী কর্মকর্তা, ডাক্তার, নার্স, আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবকরা সরকারী ও বেসরকারীভাবে স্বল্প পরিমানে পেয়েছেন পিপিই, মাস্ক ও গ্লোভস। প্রশাসনের পাশাপাশি সারা দেশে সাংবাদিকরাও পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে বাড়ীর বাইরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। বরেন্দ্র অঞ্চলের উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন মহামারী করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সংক্রমণ মোকাবেলায় কিছু এলাকায় লকডাউন, সন্দেহভাজন লোকদের জন্য নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও বরেন্দ্র অঞ্চলের (রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ)’র মাঠের বোরো ও আঊস ফসল তুলতে প্রায় ১২৫টি উপজেলায় প্রতিদিন শত শত ধানকাটা শ্রমিক ঢুকছে এ অঞ্চলে। জেলা প্রশাসন ধানকাটা শ্রমিকদের প্রাথমিত স্বাস্থ্য পরিক্ষা করেই বরেন্দ্র অঞ্চলে পাঠাচ্ছেন। বিশেষ করে রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার ৬৭টি ও রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৫৮টি উপজেলার যে অঞ্চলে ওইসব শ্রমিক যাচ্ছেন সেখানে গৃহস্তের বাড়িতে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকী নিয়েই কাজ করবেন তারা।