দেশের তরমুজের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ হয় বরিশাল অঞ্চল থেকে। ভালো স্বাদের পাশাপাশি আকারে বড় হওয়ায় এখানকার তরমুজের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। এবার আবহাওয়ার পাশাপাশি সবকিছু অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটলেও সেই হাঁসি এখন কান্নায় পরিনত হয়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এ অঞ্চলের কয়েক কোটি টাকার তরমুজ।
সূত্রমতে, করোনা প্রতিরোধে দেশব্যাপী চলমান লকডাউনের কারণে যানবাহন বন্ধ থাকায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে তরমুজ পাঠাতে পারছেন না ব্যবসায়ীর। নদী পথে ট্রলার ও সড়ক পথে ট্রাকে সীমিতভাবে তরমুজ পাঠানো শুরু হলেও ভাড়া গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের তরমুজ চাষী আমীর আলী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষেতের তরমুজ এখনও বাজারে বিক্রি করতে পারিনি। ফলে আমরা খুবই লোকসানের মধ্যে পরেছি। সুমন বেপারী নামের এক আড়ত মালিক জানান, আগে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে তরমুজ নিতে পাইকারী ব্যবসায়ীরা আসতো। এবার করোনার কারণে তারা আসতে পারেননি, ফলে তরমুজ বিক্রি হচ্ছেনা। চলমান করোনা ও রমজানের কারণে চলতি মৌসুমে তরমুজ চাষিরাও শেষ, আমরাও শেষ। মিন্টু গাজী নামের আরেক আড়তদার জানায়, আগে যে তরমুজ আমরা একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকায় বিক্রি করেছি, এবার তা ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে তরমুজের সঠিক মূল্য না পাওয়ায় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন এ অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ তরমুজ চাষীরা।
সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় প্রায় ২৪ হাজার ৬৮৮ হেক্টর জমিতে তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। সাধারণত বছরের এ সময়টাতে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক-ডাকে জমজমাট থাকে বরিশালের বিভিন্ন আড়তগুলো। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাবে এবার ক্রেতার সংখ্যা নেই বললেই চলে।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আফতাব উদ্দিন বলেন, বরিশাল অঞ্চলে এবার তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে, তরমুজের আকারও ভালো হয়েছে। করোনার কারণে প্রথমদিকে বিক্রিতে একটু বাঁধা সৃষ্টি হলেও বর্তমানে তরমুজ খুব ভালোভাবে বিক্রি হচ্ছে, বাজারজাত করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ভোলার ৮৫ ভাগ, পটুয়াখালীর ৭৫ ভাগ ও বরগুনার ৬০ ভাগ তরমুজ বিক্রি হয়ে গেছে।