নড়াইলের কালিয়ায় দু’দল গ্রামবাসির মধ্যে দু’দফা সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছে। আহতদের কালিয়া ও খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের ১৮টি বাড়িতে ভাংচুর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যার পূর্বে ও বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার জোকা গ্রামে দু’দফা ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার জোকা গ্রামের আব্দুল হাই শেখের একখন্ড জমি ওই গ্রামের কায়েম শরীফের কাছে বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে হাই শেখ ও কায়েমের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ মীমাংসার জন্য পুলিশের মধ্যস্থতায় কালিয়া থানায় একটি সালিশী বৈঠক বসে। সালিশদাররা মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে উভয়পক্ষের দেনা-পাওনা মিটিয়ে দিয়ে সালিশের রায় প্রদান করে। রায়ের প্রেক্ষিতে কায়েম শরীফ ওই জমি কিনতে ব্যর্থ হয়। এর জের ধরে ওইদিন বিকাল ৬টার দিকে কায়েম শরীফের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একদল দুর্বৃত্ত আব্দুল হাই শেখের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে অতর্কিতভাবে সশস্ত্র হামলা চালায়। হামলা চালিয়ে ইছা শেখ, রহমত শেখ, আকাশ শেখ, মতিয়ার শেখ, কালাম শেখ, মিটু কাজী ও লিটু কাজীসহ ১৫টি বাড়িঘর ভাংচুর করে। এসময় হামলাকারীরা আকাশ শেখ (২৪), মিটু কাজী (৪৫) ও তারিন বেগমসহ (২৫) অন্তত ৫জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। ওই হামলার ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরদিন বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে বিবাদমান ওই দু’টি গ্রুপ আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এতে একই গ্রামের আলি শেখ (৪৩), কুদ্দুস শরীফ (৫৪), বুলবুল শেখ (৩৫) ও কালিয়া থানার কনেষ্টবল (গাড়ীর চালক) আতিকুর রহমানসহ (৩২) অন্তত ১০জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে রবিউল শেখ, বাচ্চু শেখ ও দুলাল শেখেরসহ উভয়পক্ষের ১৮টি বাড়ীঘর ব্যাপক ভংচুর করা হয়। ওই সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ ঠেকাতে গেলে কনেষ্টবল আতিকুর রহমানের বাম হাতে মাছমারা কোচের কোপ লেগে দু’টি ফলা গুরুতরভাবে তার হাতে বিধে যায়। দ্রুত তাকে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সফল অপারেশনের মাধ্যমে তার হাত থেকে কোচের ফলা বের করতে সক্ষম হন।
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুল হুদা, এএসপি (সার্কেল) রিপন চন্দ্র সরকার ও কালিয়া থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ টহল দিচ্ছে।
কালিয়া থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।