রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের দোয়ালীপাড়া বাঙালীপুর এলাকায় ইটভাটার কালো ধোয়া ও বিষাক্ত গ্যাসে কৃষকের একশত একর জমির বোরো ধানক্ষেত পুড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রতিবাদে কৃষকরা এলবিএল ইটভাটার সামনে ক্ষতিপুরনের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে।তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাও কাছে ইটভাটাটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা।
সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে , উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের খিয়ারজুম্মা ও বাঙালীপুর এলাকার জমি নিচু হওয়ার কারনে বোরোধানের বাম্পার ফলন হয়।ওই এলাকার অনেক কৃষক জমির মালিকের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন বলে একাধিক কৃষক জানান।চলতি বোরো মৌসুমে আর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।কৃষকদেও সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে এলবিএল ইটভাটার কালো ধোয়া ও বিষাক্ত গ্যাস।আর ভাটার কালো ধোয়া ও বিষাক্ত গ্যাসে অর্ধশতাধিক কৃষকের প্রায় একশত একর জমির বোরো ধানক্ষেত পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিপুরনের দাবিতে আলমপুর ইউনিয়নের খিয়ারজুম্মা দোয়ালীপাড়া বাঙালীপুর এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষক তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসে অভিযোগ করেন।
দোয়ালি পাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (৪২) বলেন,আমার ১৫ শতক জমির ধান পুড়ে গেছে ইটভাটার মালিক আমাক এক হাজার পাঁচ শত টাকা ক্ষতিপুরণ দিয়েছেন।একই এলাকার তৈয়ছোন বেওয়া (৪৭)বলেন,ধানের গাছ পোড়া গেইছে এতে আমার যে ক্ষতি হইছে তার টাকা পয়সা কেউ দেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ওই এলাকার ডাঙ্গীর দোলার একাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, আমাদেও মতো অনেক ক্ষতির ন্যায্য মূল্য পায়নি এই ধান ক্ষেতের।উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন।ইটভাটার ম্যানেজার আকাশ রহমান বলেন, এই এলাকার সকল জমি আমাদের নিজেদের মধ্য।এখানে কি করবো কি না করবো সেটা একান্ত আমাদের ব্যাপার।সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন,আমার এ বিষয়ে তথ্য দেয়া নিষেধ আছে।কোন জানতে চাইলে সরাসরি মামুনের সাথে কথা বলেন।
ওই ইটভাটার মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,আমার ইটভাটার এলাকায় আরো বেশ কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে।কৃষকদেও যদি ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে আমি অবশ্যই ক্ষতিপূরণ পর্যায়ক্রমে দিব।তবে অন্য ভাটার মালিকদেও সাথেও বসা উচিৎ,তাহলেই ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সমস্যা সামাাধান করা সম্ভব।ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্তন)০ আইন ২০১৩ এর ৮ ধারায় বলা আছে কৃষি জমি ও আবাসিক সরকারি বা ব্যক্তগত বন অভয়ারন্য বাগান জলাভুমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। আবার ৮ এর দুই ধারায় বলা আছে নিষিদ্ধ এলাকায় সিমানার মধ্যে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র কিংবা লাইসেন্স দিতে পারবে না। এরপরেও আইন অমান্য করে গড়ে উঠেছে তারাগঞ্জে ৪৮টিরও বেশী ইট ভাটা।এরমধ্যে ১৫টির বৈধ কাগজপত্র থাকলেও বাকিগুলো চলছে অবৈধ কাগজ পত্রে আর ক্ষমতার দাপটে।
আলমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মন্জুর কাদের বলেন, আমি আমার ইউনিয়নের ইটভাটাগুলো দেখাশুনা করি।আবহাওয়া খারাপ থাকায় খোজ নিতে পারিনি।অসাবধনতার কারনে ধোয়া উপর দিয়ে বের না হয়ে নিচের দিকে বের হয়ে ধানক্ষেত পুড়ে গেছে।আমার কাছে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা অভিযোগ করে ক্ষতিপুরন চেয়ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার অশোক কুমার বলেন,ফসলি জমির পাশে ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় ইটভাটা অনুমোদন দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। ভাটা মালিকরা ক্ষমতার দাপটে যত্রতত্র ভাটা স্থাপন করায় এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন,কৃষকের ক্ষতি হলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে ওই ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে । এলাকা বাসী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট সরেজমিনে তদন্ত করে ওউ ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।